শরীরে ফাটা দাগ দূর করার উপায়

স্ট্রেচ মার্ক বা শরীরের ফাটা দাগে এটি মোটেও ভালো কথা নয় এটি আপনার সৌন্দর্যকে নষ্ট করে দেয় একেবারে। আমাদের মাঝে অনেক মানুষ আছে যারা জানতে চাই শরীরের ফাটা দাগ দূর করার উপায়। এছাড়া শরীরের চামড়া ওঠার কারণ সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা থাকে না। আপনি যদি শরীরের চামড়া ওঠার কারণ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে পুরো পোস্টটা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খুব মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে তাহলে আপনি সঠিক তথ্যটা জানতে পারবেন।
বিভিন্ন কারণে শরীরের নানা অংশে ফাটা দাগ দেখা দেয়। যেমন ওজন বৃদ্ধি পাওয়া গর্ভাবস্থা ফাইবারের টান ইত্যাদি এসব কারণেই বেশিভাগ দেখা যায় যে শরীরে ফাটা দাগ হয়েছে।

ভূমিকা

বিভিন্ন কারণে দেখা যায় যে শরীরে ফাটা দাগ হয়। আপনি যদি দৈনিক ১০ গ্লাস পানি পান করেন তাহলে ত্বকের স্থাথিতিস্থাপকতা বজায় রাখে তখন মসৃণ ও কোমল এবং ত্বকে যদি ফাটা দাগ থাকে তা প্রতিরোধ হয়ে যায়। ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে যেমন টক ফল, মোটর, মরিচ, আনারস, পালং শাক, টমেটো, কাঁচা মরিচ, বাঁধাকপি ইত্যাদি দৈনিক খাবার তালিকায় যোগ করতে হবে।

এগুলো ফ্রি মেডিকেলের বিরুদ্ধে কাজ করে্ এছাড়া ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড এই ধরনের খাবার দাগ দূর করতে সাহায্য করে। আর আপনি চাইলে কিছু ঘরোয়া উপায়ে আপনার শরীরের ফাটা দাগ দূর করতে পারবেন এছাড়াও শরীরে চামড়া ওঠার সমস্যা সমাধান করতে পারবেন ঘরোয়া উপায় হচ্ছে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হীন।

শরীরে ফাটা দাগ দূর করার উপায়

শরীরের ফাটা দাগ একবার সৃষ্টি হলে এইটি দূর করা অনেক মুশকিল হয়ে যায় আর এই সমস্যা ছেলেদের থেকে নারীদের বেশি দেখা যায়। যাদের ওজন আগে বেশি ছিল কিন্তু এখন তা কমে গেছে তাদের ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে শরীরের ফাটা দাগ। আর এই সমস্যা হলে অনেক দুশ্চিন্তা হয় এর সমাধান কিভাবে পাওয়া যায় অনেকে আবার বিভিন্ন ধরনের ঔষধ মলম ব্যবহার করে তার পরেও ভালো ফল পায় না এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে ঘরোয়া কিছু উপায়। আসুন তাহলে জেনে নি শরীরের ফাটা দাগ দূর করার কিছু উপায় সম্পর্কে।

অ্যালোভেরা অ্যালোভেরা আমাদের শরীরের ফাটা দাগ দূর করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। অ্যালোভেরা একটি ব্যাকটেরিয়াল রোধী উপাদান। নিয়মিত এলোভেরা জেল ব্যবহার করলে শরীরের ফাটা দাগের পাশাপাশি চুলকানিও কমে যায়।

আমন্ড অয়েল শরীরের দাগ চোখ দূর করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে আমন্ড অয়েল। অনেকেই চুল ও ত্বকের যত্নে এই তেলের ব্যবহার করে থাকে নিয়মিত যদি এই তেল ব্যবহার করা হয় তাহলে সুফল পাওয়া যায়। শরীরের ফাটা দাগ দূর করতে চাইলে শরীরে ব্যবহার করা যায় যে কোন একটি উপাদানের সঙ্গে আমল ওয়েল মিশিয়ে নিন তারপরে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এরপর লাগিয়ে নিন এভাবে রেখে দিন কয়েক মিনিট তারপর ধুয়ে ফেলুন। এতে দেখবেন আপনার শরীরের হাটা দাগ ও চেস্টমার্ক দূর হয়ে গেছে।

হলুদের ব্যবহার ত্বক ভালো রাখতে হলুদের ব্যবহারে ও কার্যকারিতা সম্পর্কে আমাদের কমবশি সবারই ধারণা রয়েছে। এটি আমাদের শরীরের ফাটা দাগ দূর করতেও কার্যকরী। টক দইয়ের সাথে হলুদ মিশে একটি মিশ্রণ তৈরি করে সেটি টেস্ট মার্কের ওপর ব্যবহার করতে হবে এতে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যাবে। এভাবে যদি প্রতিদিন ব্যবহার করা হয় তাহলে দেখবেন আপনার শরীরের স্ট্রেচ মার্ক দূর হয়ে গেছে।

জলপাইয়ের তেল একটি গবেষণায় জানা গেছে জলপায়ের তেল ভালোভাবে আদ্রতা রক্ষা করতে পারে। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজাত ত্বকের ক্ষতি কমিয়ে দেয় যেমন ফাটা দাগ ও চুলকানি। দুই থেকে তিন টেবিল চামচ কোল্ড প্রেসড জলপাইয়ের তেল ফাটা দাগ আছে এমন স্থানে মেখে মালিশ করতে হবে। নিয়মিত যদি ব্যবহার করেন তাহলে ধীরে ধীরে আপনার শরীরের দাগ কমে যাবে।

শরীরে চামড়া উঠার কারণ

আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে দেখা যায় আমাদের ত্বক হয়ে যায় শুষ্ক ও রুক্ষ। ত্বক বেশি শুষ্ক হলে চামড়া উঠার সমস্যাও বেড়ে যায় অনেকের হাত ব মুখে চামড়া উঠতে শুরু করে। ত্বকের চামড়া ওঠার মূল কারণ হচ্ছে রোদে পোড়া বা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। যদি রোদে পোড়ার কারণে চামড়া উঠে তাহলে আপনি চাইলে কিছু ঘরোয়া উপায়ে এর সমাধান করতে পারবেন। ত্বকের চামড়া ওঠা বন্ধ করতে হলে অবশ্যই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি উপায় হল ত্বক আর্দ্র ও মসৃণ রাখা।

আর শরীরের চামড়া ওঠা শুরু হয় প্রথমে হাত থেকে। কারণ সারাদিনে হাতের তালু কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত থাকেই আর এই ফলে আমাদের হাতের তালু হয়ে যায় রুক্ষ। এ কারণেই চামড়া উঠতে শুরু হয় আর ঠিক তেমনি পায়ের তালু যদি অযত্ন থাকে তাহলে সেখান থেকেও চামড়া উঠে। অনেকের আবার ধারণা থাকে যে শীতকালে চামড়া ওঠা স্বাভাবিক কিন্তু বছর জুড়েই যদি হাতও পায়ের চামড়া ওঠে তাহলে এটি অবশ্যই সমস্যার কারণ।

সারা বছর হাত-পায়ের চামড়া ওঠা কখনোই স্বাভাবিক না। হাতে চামড়া উঠলে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চামড়া ওঠার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে যেমন পুষ্টিহীনতা ত্বকের অপরিচর্যা অবহেলা থেকেও চামড়া ওঠার সমস্যা হতে পারে। চামড়া উঠে শরীরের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। আসুন আমরা জেনে নেই চামড়া উঠার সমস্যা থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায়।

সোয়াবিনের গুঁড়া সয়াবিনের পোড়া হাত পায়ের চামড়া উঠে যাওয়া বন্ধ করতে খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। সয়াবিন কড়াই দিয়ে হালকা আছে কিছু কোন নেড়ে গুড়া করে নিতে হবে। এরপরে এটি হাত ও পায়ে দিয়ে হাত-পা পরিষ্কার করতে হবে এটি মশ্চারাইজারের কাজ করে। এভাবে যদি একটু খেয়াল করে হাত বা পরিষ্কার রাখা যায় তাহলে দেখবেন আপনার চামড়া ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে।

লবণ ও শ্যাম্পু হালকা গরম পানির সঙ্গে লবণ ও শ্যাম্পু মিশিয়ে হাতের তালুর পরিচর্যা করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। গরম পানির মধ্যে আধা চামচ শ্যাম্পু ও একটু লবণ দিয়ে ১০-১৫ মিনিট হাট ডুবিয়ে রাখতে পারেন। নির্দিষ্ট সময় শেষে ব্রাশ দিয়ে হাত-পা ঘষবেন দেখবেন হাত পায়ের মরা চামড়া গুলো খুব সহজে উঠে যাবে।

নারিকেল তেল প্রাকৃতিক ময়শ্চেরাইজার হিসাবে কাজ করে। এই তেল তাই ঘুমোনোর আগে ত্বকে নারিকেল তেল ব্যবহার করুন। এতে আপনার ত্বক হবে কোমল হাত পায়ের পাতা ও তালু সহ যেখান থেকে আপনার চামড়া উঠবে সেখানে মধু ব্যবহার করুন। মুহূর্তেই ত্বকের আদ্রতা ফিরে আসবে কারণ মধু প্রাকৃতিক মস্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।

তবে আপনাকে পেট্রোলিয়াম ভিত্তিক তেল ভিত্তিক ক্রিম এড়িয়ে চলতে হবে। এগুলো ব্যবহারের ফলে শরীরের চামড়া আরও উঠতে পারে। আর গরম পানির বদলে আপনাকে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসলের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। গরম পানি ব্যবহারের ফলে ত্বক আরো শুষ্ক হয়ে পড়ে। এছাড়াও আপনি চাইলে গোসলের পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন এতে চামড়া ওঠার প্রবণতা কমে যেতে শুরু করে।

শরীরের ফাটা দাগ দূর করার ক্রিমের নাম

যাদের মাতৃজনিত কারণে ওই ছাড়াও ওজন বৃদ্ধির কারণে শরীরে ফাটা দাগ রয়েছে তাদের জন্য Essential oil টি অত্যন্ত কার্যকরী একটি সমাধান দিবে। প্রথম তিন দিনে আপনি নিজের পরিবর্তন বুঝতে পারবেন এবং এক মাস ব্যবহার করলে এটি আপনার স্কিনকে পুনরায় আগের রূপে ফিরে আনবে।

মেয়েদের পেট ফাটে কেন

গর্ভকালীন অবস্থায় মহিলাদের হুট করে ওজন বেড়ে যায় তাই চামড়ায় টান পড়ে দাগ হয়ে যায় একে বলা হয় striae gravidarum। সময়ের সাথে সাথে আবার কিছু দাগ চলে যায় আবার অনেক সময় শিশু জন্মের পরও অনেক দাগ থেকে যায় আর এজন্যই মেয়েরা একটুও চিন্তায় পড়ে যাই। অথচ একটু সচেতন হলেই এই ডাক পড়া ভাবটা কিছুটা হলে কমিয়ে আনা সম্ভব। শুধু পেট নয় স্তন বা উরুতেও দাগ পড়তে দেখা যায় অনেক সময়।

৬০-৯০% মায়েদের পেটে দাগ পরে আর নাইন্টি পার্সেন্ট শরীরে কোন অংশে দাগ পড়ে না। পেটে মাতৃকালীন দাগ পড়ার কারণ হলো পেটের চামড়া চাপের কারণে পেট ফেঁপে যায়। রিলাস্কিন ও করটিসল হরমোন বেড়ে গিয়ে মিউকোপলিসেকারাইড জমা করে যা জোজক কলা থেকে পানি শোষন করে ফলে টানটান হয়ে পড়ে। ঠিক এ সময়েই দাগের সৃষ্টি হয় যাদের বডি মাস ইনডেক্স বেশি তাদের ডাক হবার প্রবণতাও অনেক বেশি। কম বয়সী মেয়েদের ক্ষেত্রে মাতৃত্ব কালীন দাগ পরাটা খুবই সহজ।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আপনারা হয়তোবা এত সময় জেনে গেছেন শরীরে ফাটা দাগ দূর করার উপায়। এছাড়া শরীরে চামড়া উঠার কারণ কি? শরীরের ফাটা দাগ দূর করার ক্রিমের নাম এগুলো সম্পর্কে যদি আপনাদের জানা না থাকে তবে এত সময় বিভিন্ন ধরনের তথ্য আপনারা জেনে গেছেন ‌। শরীরের দাগ পড়া মোটেও ভালো করা নয় এটি শরীরের সৌন্দর্য কে নষ্ট করে দেয়।

অনেক সময় দেখা যায় যাদের ওজন বেশি তাদের শরীরে ফাটা দাগ বেশি হয়। আবার মুখে ও গলায় কালো দাগ পড়ে তবে মহিলাদের গর্ভকালীন stress এর কারনে এটি বেশি হয়। আপনি যদি আমাদের পুরো পোস্টটা পড়েন তাহলে অনেক বেশি উপকৃত হবেন। আজকের লেখা আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য পেতে আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। এবং আপনাদের যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Setu24 নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url