গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস কত থাকা উচিত
আমাদের মাঝে অনেক গর্ববতী মা আছে তারা জানে না গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস কত থাকা উচিত ও গর্ভ অবস্থায় ডায়াবেটিস কমানোর উপায় কি এই সম্পর্কে আজকে আমরা জানাবো। গর্ভ অবস্থায় ডায়াবেটিস ঠিক কত থাকা উচিত সেই সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে পুরো পোস্টটা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খুব মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন।
গর্ভ অবস্থায় ডায়াবেটিস হয় যদি আপনার বয়স ২৫ এর বেশি হয় সে ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস হবে। এছাড়াও যদি ওজন বেশি থাকে সে ক্ষেত্রে গর্ভ অবস্থায় ডায়াবেটিস হয়।
ভূমিকা
গর্ভ অবস্থায় আগেই যদি দেখা যায় যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন তাহলে গর্ভপাত ও সন্তান জন্মগত আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গর্ভাবস্থায় যত সামনে এগিয়ে যেতে থাকবে ডায়াবেটিসের আক্রান্ত নারীদের উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকে ততটাই বেড়ে যাবে। এছাড়াও শরীরে আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিবে। গর্ভ অবস্থায় প্রায় ৯ শতাংশ গর্ভবতী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়। সেজন্য গর্ভধারণের আগে থেকে আপনাকে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। আপনার যদি ডায়াবেটিস হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস কত থাকা উচিত
কিছু নারীদের দেখা যায় গর্ভ অবস্থায় ডায়াবেটিস হয়। গর্ভাবস্থায় যদি গর্ভবতী মায়ের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায় তাহলে তাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হয়। গর্ভ অবস্থায় কিছু কিছু লক্ষণ যদি দেখা যায় তাহলে আপনি বুঝবেন যে আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে। যেমন আপনার অতিরিক্ত তৃষ্ণা লাগবে দুর্বলতা শুকনো হয়ে থাকা এগুলো ধরনের লক্ষণ দেখা দিবে।
গর্ভকালীন অবস্থায় যদি ডায়াবেটিস হয় তাহলে মা ও শিশুর উভয়েরই ঝুঁকি বেড়ে যায়। সন্তানের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে অতিরিক্ত ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ। এছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের আগে জন্মগ্রহণ করা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যাওয়া জন্মদানের পূর্বে বা জন্মদানের পরে মৃত্যু এসব ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। মায়ের ক্ষেত্রে দেখা যায় রক্তচাপ বেড়ে যায়।
খিঁচুনি ডেলিভারি অপারেশনের মাধ্যমে হওয়া জন্মদানের পরবর্তী সময়ে ডায়াবেটিস হওয়া এগুলো সমস্যা দেখা দিতে পারে। গর্ভ অবস্থায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের রাখা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ গর্ভ অবস্থায় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা যদি ৪.৫ মিনিমোল লিটার থেকে পাঁচ বা সর্বোচ্চ ৫.৫ মিনিমোল লিটার হতে পারে। এছাড়াও খাবার ২ ঘন্টা পরে ৫ থেকে ৬ মিলি মন লিটার হতে পারে গর্ব অবস্থায় ডায়াবেটিস এরকম থাকে।
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
গর্ভ অবস্থায় দেখা যায় যে দিন দিন ডায়াবেটিসের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের মেন দুটি ব্যাপার আছে সেটি হচ্ছে একটা মহিলাদেরকে খুবই সচেতন থাকতে হয়। তারা যখনই শুনে তার ডায়াবেটিস হয়েছে তখন কিন্তু তারা খুবই সচেতন হয়ে যায়। ডায়াবেটিস প্রেগনেন্সি অবস্থায় দু রকমের হতে পারে, একটা রোগীর আগে থেকে ডায়াবেটিস থাকে আর একটা হলো যে রোগী গর্ভ অবস্থায় আসার পর ডায়াবেটিস ধরা পড়েছে।
গর্ভাবস্থায় মায়েদের অনেক যত্নের প্রয়োজন হয়। এ সময়ে যদি একটু অসাবধানতা ভাবে চলা যায় তাহলে বিভিন্ন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় দেখা যায় অনেক মেয়ের সুগার বেড়ে যায় আর তার সাথে সাথে ওজনও বাড়ে। এটা যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করা হয় তাহলে গর্ভের সন্তানও বিভিন্ন ধরনের রোগে ভুগতে পারে। আসেন তাহলে আমরা জেনে নেই গর্ভ অবস্থায় ডায়াবেটিস কমানোর উপায় সম্পর্কে।
- মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া যাবেনা
- নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে
- যেসব শাকসবজি খেলে ইনসুলিন বেড়ে যায় সেগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- কার্বোহাইডেট চিনি যুক্ত খাবার খাওয়া যাবেনা।
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস পরীক্ষা
গর্ভা অবস্থায় যে পরীক্ষাটি করা হয় সেটির নাম হচ্ছে ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট। এটি এক ধরনের রক্ত পরীক্ষায় পরীক্ষার মাধ্যমে বোঝা যায় যে গর্ভবতী মায়েদের ডায়াবেটিসের অবস্থা কেমন আছে। গর্ভকালীন অবস্থায় ২৫ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে স্ক্রিনিং করে বোঝা যায় যে তার ডায়াবেটিস আছে কি নেই। কিন্তু কিছু কিছু গর্ভবতী মহিলাদের তিন মাসের মধ্যেও স্ক্রিনিং করে ডায়াবেটিস শনাক্ত করা যায় না।
যেসব নারীদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি রয়েছে তাদের প্রথমেই স্ক্রিনিং করে নেওয়া উচিত। স্ক্রিনিং করার পর দুইটি জিনিস হতে পারে একটি হচ্ছে গর্ভাবস্থার আগে ডায়াবেটিস ছিল ও গর্ভ অবস্থার পরে ডায়াবেটিস হয়েছে। আবার এমনও হতে পারে ডায়াবেটিস এখনই শুরু হয়েছে। যাদের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে তাদের প্রেগনেন্সির প্রথম অবস্থাতে স্ক্রিনিং করে নেয়া উচিত।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস মেলিটাস
দেখা যায় যে কোন রক্তের শর্করার গ্লুকোজ এর মাত্রা বেড়ে যায় গর্ভাবস্থায় এবং প্রসবের পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসা। ডায়াবেটিস মেলিটাস অন্য রোগের সাথে যুক্ত করে এটি একটি গণ্য অবস্থায় হিসেবে প্রকাশ হতে পারে যেমন আমাশয় রোগ। গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়াবেটিস একটি অস্থায়ী অবস্থান যার সাথে যুক্ত গর্ভ অবস্থা। এই অবস্থায় গর্ব অবস্থায় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে গেলে সাধারণ প্রসবের পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
যদি গর্ব অবস্থায় প্রথমবারের মতন ডায়াবেটিস ধরা পড়ে তাকেই বলা হয় গর্ভকালীন ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস মিলিটাস বলা হয় গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়াবেটিস মা ও শিশু দুজনের ঝুঁকি থাকে তাই ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করতে সঠিক সময়ে ডায়াবেটিস নির্ণয় করতে হয়। গর্ভকালীন ডায়াবেটি মেলিটাস গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের একটি ক্ষণস্থায়ী অবস্থা তবে অসচেতনার কারণে মা ও সন্তানের জন্য স্বল্প দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য পরিণতি ঘটতে পারে। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস মেলিটাসের জন্য পুষ্টি থেরাপির প্রধান লক্ষণ হয়েছে মাতৃ এবং ভ্রুনের পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অনিয়মিত রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করা।
গর্ভাবস্থায় গ্লুকোজ খাওয়ার উপকারিতা
সুস্থ শরীরে গ্লুকোজ খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি ভালো না। গ্লুকোজ খেলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি জমা হয়। এছাড়াও ডায়াবেটিস আশঙ্কা বেড়ে যায় গর্ভ অবস্থায় গ্লুকোজ খাওয়া একদমই উচিত না। কারণ গর্ভ অবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া রক্তচাপ হৃদ রোগ এইসব রোগের ঝুঁকি ও বেড়ে যায়। অতিরিক্ত মাত্রায় শরীরের ওজন বেড়ে যায়।
এছাড়াও গ্লুকোজ খেলে ডায়রিয়া, মাথা ঘোরা, রক্তস্বল্পতা, দুর্বলতা, পেট খারাপ এসব বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে । সেজন্য গর্ব অবস্থায় গ্লুকোজ খাওয়া একদমই উচিত নয়। গর্ভাবস্থায় চেষ্টা করবেন চিনি জাতীয় খাবার কম খাওয়ার। টিনি খাবারে থাকলে ডায়াবেটিকস বেড়ে যেতে পারে এতে মা ও শিশুর বিভিন্ন ধরনের রোগের আশঙ্কা থেকে যায়।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আপনার এত সময় জেনে গেছেন গর্ব অবস্থায় ডায়াবেটিস কত থাকা উচিত। এছাড়া গর্ভ অবস্থায় ডায়াবেটিস কমানোর উপায় গর্ব অবস্থায় লক্ষণ বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে আপনাদের জানা হয়ে গেছে। আপনি যদি আমাদের পুরো পোস্টটা পড়ে থাকেন তাহলে আপনার অনেক বেশি উপকারে আসবে। গর্ভ অবস্থায় ডায়াবেটিস হলে মা ও শিশুর শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এই সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে আপনাকে কিছু খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে তাহলেই গর্ভাবস্থায় আপনার ডায়াবেটিসের সমস্যা হবে না। আজকের লেখা আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লাগে তবে প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য পেতে আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। এবং আপনাদের যদি কোন মন্তব্য থাকে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
Setu24 নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url