গরমে অতিরিক্ত গরম কমানোর উপায়
গ্রীস্মের অতিরিক্ত গরমে দেখা যায় আমাদের শরীরে নানা রকমের সমস্যা সৃষ্টি হয়।
কিন্তু অনেকে আছে যারা জানে না গরমে অতিরিক্ত গরম কমানোর উপায় ও শরীরে অতিরিক্ত
গরম লাগার কারণ এগুলো সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই। আসুন তাহলে আজকে আমরা গরম
সম্পর্কে আপনাদেরকে বিভিন্ন রকমের তথ্য জানাবো। আর সঠিক তথ্য জানতে হলে অবশ্যই
আপনাকে পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন।
এই গরমে যদি একজন মানুষ রোদে বেশি সময় থাকে তাহলে তার স্ট্রোকের সম্ভাবনা
থাকে। এছাড়াও বয়স্ক থেকে শিশু সবারই শরীরের যে কোন সমস্যা ঝুঁকি থেকে
যায়।
ভূমিকা
গরমের সময় দেখা যায় যে অনেক মানুষের গরম একটু বেশি লাগে আবার অনেক মানুষের গরম
একটু কম লাগে। গরমের সময় অবশ্যই আপনাকে সুতির পোশাক পড়তে হবে তাহলে গরম কম
লাগবে। এছাড়াও যদি আপনার ঘর ছাদের হয়ে থাকে তাহলে ছাদের ঘর খুব সহজে আপনি
ঠান্ডা রাখতে পারবেন। সেজন্য আপনাকে ছাদের উপরে কিছু গাছ লাগাতে হবে তাহলে দেখবেন
যে গাছের ছায়াতে ঘর অনেক বেশি ঠান্ডা হয়ে থাকবে।
আরও পড়ুনঃ অতিরিক্ত গরমে কি কি সমস্যা হয়
এছাড়া আপনি যদি চান আপনার রুমে কিছু বরফের টুকরো এনে ফ্যান চালু করে দিলে দেখবেন
যে অনেকটা বেশি রুম ঠান্ডা হয়ে গেছে। আর অবশ্যই চেষ্টা করবেন গরমের সময় দিনের
বেলা বাইরে কম বের হওয়ার। আর যদিও বের হন তাহলে অবশ্যই ছাতা নিবেন ও ত্বকে
সানস্ক্রিন ব্যবহার করে বের হবেন তাহলে সূর্যের রশ্মির হাত থেকে বাঁচতে পারবেন।
আর গরমের সময় চেষ্টা করবেন বেশি ফলমূল খাওয়ার যেগুলো পানি জাতীয় ফল সেগুলো
খেলে দেখা যায় যে আমাদের শরীরে পানি শূন্যতা হয় না।
গরমে অতিরিক্ত গরম কমানোর উপায়
গরমের সময় ছোট থেকে বড় সব বয়সী মানুষেরই বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা
দিতে পারে। যেমন পানি শূন্যতা ডায়রিয়া ঘামাচি হাম সর্দির কাশি এমনকি জ্বর
হতে পারে। গ্রীষ্মকালের প্রথম দিক থেকে গরম অনুভব করা যাই তবে যত দিন যায় তত গরম
আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। গরমের সময় দেখা যায় যে বৃষ্টিও কম হয়। এই গরমে যদি
রোদে কেউ অনেক সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকে তাহলে সে অসুস্থ হয়ে পড়বে।
গ্রীস্মের প্রথমে ও যদি গরম সেভাবে অনুভব করা যায় না কিন্তু জ্যৈষ্ঠ শুরুতে অনেক
বেশি গরম অনুভব করা যায়। কখনো কখনো দেখা যায় যে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে।
আসুন তাহলে এবার আমরা জানবো গরমে অতিরিক্ত গরম কমানোর উপায় সম্পর্কে। গরমের সময়
আপনাকে চেষ্টা করতে হবে হালকা ও পাতলা রঙের পোশাক পরার। এছাড়াও যদি আপনি বাসার
বাইরে থাকেন তাহলে চেষ্টা করবেন সরাসরি রোদকে এড়িয়ে চলার।
গরমের সময় আপনাকে অতিরিক্ত পানি পান করতে হবে যদি পানির শূন্যতা দেখা দেয় তাহলে
তা আপনার স্বাস্থ্যর জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর হতে পারে। সেজন্য আপনাকে পানির ও
শরবত বেশি বেশি করে পান করতে হবে যাতে শরীরে পানি শূন্যতা না দেখা দেয়। আপনি যদি
দীর্ঘসময়ে ধরে বাইরে থাকেন গরমের তাপে তাহলে বেশি করে স্যালাইন পানি পান করুন
স্যালাইনের পানিতে থাকে পটাশিয়াম সোডিয়াম। এছাড়াও থাকে চিনি যা আমাদের শরীরকে
সজীব রাখতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
এছাড়াও আপনাকে গ্রীষ্মকালীন ফল দিয়ে জুস বানিয়ে পান করতে হবে তাহলে গরম কম
লাগবে। মাংস বিরিয়ানি এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে এগুলো এড়িয়ে চলে আপনাকে ফলমূল ও
সবজি বেশি বেশি খেতে হবে। এছাড়াও গরমের দিনে আপনার প্রসাবের রং খেয়াল করতে হবে
যদি দেখা যায় প্রসাবের রং গাঢ় হয় তাহলে বুঝে নিবেন যে আপনার পানি শূন্যতা দেখা
দিচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
যখন বাইরে যাবেন ঠিক সে সময়ে ছাতা নিয়ে যেতে হবে তাহলে সূর্যের তাপ সরাসরি
আপনার শরীরে পড়বে না। আপনার ত্বককে সূর্যের রশ্মি থেকে রক্ষা করতে হলে অবশ্যই
আপনাকে সানস্ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। আর সব সময় চেষ্টা করবেন গরমের সময় দিনের
বেলায় কম বাইরে যাওয়ার জন্য। এভাবে যদি আপনি চলেন দেখবেন গরমের সময় আপনার
শরীরে গরম অনেক বেশি কম লাগবে।
শরীরে অতিরিক্ত গরম লাগার কারণ
যাদের শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট আছে তাদের একটু বেশি গরম লাগে। এছাড়াও যদি দেখা যায়
গরমের দিনে ভারি কোন পোশাক পরেন তাহলেও বেশি গরম লাগে। যদি আপনি সঠিকভাবে না
ঘুমান রাতে তাহলে দেখা যে শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেশি কমে যায় আর সে থেকে শরীরে
গরম লাগতে শুরু করে। অনেক সময় দেখা যায় যাদের অল্প বয়স তাদের তুলনায় বয়ষ্করা
শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে কম পারে।
কারণ বয়স বাড়ার সাথে সাথে দেখা যায় যে আমাদের মেটাবলিজম ধীরে ধীরে হতে থাকে।
পুরুষের তুলনায় নারী শরীরে দেখা যায় যে বেশি গরম কম থাকে আর সে কারণে ত্বকের
ছিদ্রগুলি থেকে। সেজন্যই পুরুষদের তুলনায় বেশি ঠান্ডা অনুভব করে নারীরা।
শরীরের আকৃতির জন্য কিছু ব্যক্তিদের অনেক বেশি গরম লাগে। আবার যাদের শরীরে ফ্যাট
আছে তারা অন্যদের তুলনায় নিজের শরীরের গরম বেশি অনুভব করতে পারি।
কারণ অতিরিক্ত ফ্যাট শরীরকে উত্তপ্ত করে তোলে। যাদের অল্পতেই খুব বেশি গরম লাগে
তাদের মাথাও খুব তাড়াতাড়ি গরম হয়ে যায়। দেখা যায় যে এসি ঘরে বসে থেকেও তারা
ঘেমে যাই শরীরের তাপমাত্রা আচমকা অনেক সময় বেড়ে যায়। বাইরে যত গরম বেশি বাড়বে
ঠিক ততটাই গরম আপনার শরীরে তাপমাত্রা বাড়বে। যদি অতিরিক্ত গরম নিয়ন্ত্রণের
বাইরে চলে যায় তাহলে তা বিভিন্ন ধরনের তা দেখা দিতে পারে। যাদের দেখা যায় কাজের
সূত্রের বাইরে সব সময় থাকা লাগে তাদের শরীরের তাপমাত্রা মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে
যায়।
আপনি যদি অনেক টাইট জামা কাপড় পড়েন তাহলে স্বাভাবিকভাবে কখনোই শ্বাস প্রশ্বাস
নিতে পারবেন না। আর সে ক্ষেত্রে আপনার শরীরে তাপমাত্রা অনেক বেশি বেড়ে যাবে
শরীরের গরম অতিরিক্ত বেড়ে যাবে। তাপমাত্রা যদি শরীরের বেড়ে যায় তাহলে স্ট্রোক
হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় যে যাদের বেশি শরীরে তাপমাত্রা বেড়ে যায় জ্ঞান
হারিয়ে ফেলে। যাদের থাইরয়েড ব্লাড প্রেসার রয়েছে তাদের শরীরে তাপমাত্রা হঠাৎ
করে বেড়ে যায় তখন তারা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। অনেক সময় টেনশনের কারণেও দেখা যায়
যে শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেশি বেড়ে যায়।
শরীরে গরম কমানোর উপায়
যত দিন যাচ্ছে ততই তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে আর তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে
স্ট্রোকের আক্রান্ত সংখ্যাও দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। গরমের সময় ছোট বড় সবারই
স্বাস্থ্যের প্রতি নজর রাখা খুবই জরুরী। যেহেতু গরমের সময় তাপমাত্রা অনেক বেশি
বেড়ে যায় তাই আপনাকে কিছু খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। ছোট বড় সবারই কিছু খাবার
এড়িয়ে চলা উচিত। গরমের সময় পেটের সমস্যা এড়িয়ে চলতে আপনাকে ঠান্ডা জনিত
খাবার বেশি বেশি করে খেতে হবে। যেমন পানিযুক্ত খাবার চাল কুমড়ো, লাউ গরমে খাওয়া
অনেক বেশি উপকারী।
এই সবজিগুলো আমাদের পেট অনেক বেশি ঠান্ডা রাখে ও শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয় আর
এই সবজি খুব সহজেই হজম হয়ে যায়। পেঁয়াজ হচ্ছে আমাদের সানিস্টপ থেকে রক্ষা করতে
অনেক বেশি উপকারী। পেয়াজে রয়েছে কোয়ারসেটিন নামক একটি উপাদান। পিয়াজের সাথে
আপনি চাইলে গাজর মুলা শসা এগুলো যোগ করতে পারেন দিয়ে সালাত বানিয়ে খেতে পারেন।
এছাড়াও যদি লেবু রস মিশিয়ে নেন তাহলে পরিপাকতস্থানে সুস্থ থাকবে এবং ক্ষুধা ওজন
খুব সহজে কমিয়ে দিবে।
গরমের সময় শরীরকে ঠান্ডা রাখতে হলে অবশ্যই আপনাকে বেলের শরবত খেতে হবে বেলের
শরবত আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। বেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার
তবে বেলের শরবতের সাথে আপনি কখনো চীনে ব্যবহার করবেন না তাহলে এই পুষ্টিগুণ অনেক
বেশি নষ্ট হয়ে যায়। বেলের শরবতের সাথে সাথে আপনি টক দইয়ের শরবত শসা
তরমুজের শরবত রাখতে পারেন যা আপনার শরীরের পানি শূন্যতা হাত থেকে বাঁচাবে। এবং
গ্রীষ্মকালে পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা করবে।
গরমের সময় যদি আপনি বাইরে থেকে আসার পর মাথা ঝিমঝিম করে তাহলে আপনি এক বালতি
পানিতে বরফ মিশিয়ে তাতে ১০ থেকে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখতে পারেন। দেখবেন ধীরে
ধীরে শরীরে তাপমাত্রা অনেকটা বেশি স্বাভাবিক হয়ে গেছে। গ্রীস্মের দিনে প্রতিদিন
একটি করে ডাব খাওয়ার অভ্যাস করবেন ডাব আমাদের শরীরকে শীতল রাখতে সাহায্য করে।
এছাড়াও দইয়ের ঘোল খেতে পারেন দইয়ের ঘোল মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। দইয়ে
রয়েছে ভিটামিন ও প্রোটিন চাষ শরীরের এনার্জি বাড়িয়ে দেয়। এভাবে আপনি খুব সহজে
শরীরের গরম কমাতে পারবেন।
গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার উপায় কি
অতিরিক্ত গরমের সময় দেখা যায় যে আমাদের ঘর অনেক বেশি গরম হয়ে থাকে আর সেই গরম
ঘরকে ঠান্ডা রাখার জন্য অবশ্যই আপনাকে বরফের ব্যবহার করতে হবে। আপনি যদি পরে বা
ঠান্ডা পানি ব্যবহার করেন তাহলে দেখবেন যে ঘর অনেক বেশি ঠান্ডা হয়ে গেছে। যদি এক
বালতি বরফের টুকরো রুমের মধ্যে নিয়ে ফ্যান অন করে দেন তাহলে দেখবেন যে অনেকটা
বেশি গরমের তাপমাত্রা কমে গেছে।
এছাড়াও যদি একটি বাটিতে বরফের টুকরো রেখে ফ্যান অন করে দেয়া হয় তাহলে দেখবেন
কিছু সময় পর ঘর ঠান্ডা হয়ে গেছে। আর চেষ্টা করবেন বিছানায় সুতির চাদর ব্যবহার
করার জন্য। এছাড়া হালকা রঙের চাদর বিছানায় ব্যবহার করলে ঠান্ডা থাকবে রুম সেই
সঙ্গে নিয়মিত আপনাকে বেডশিট ও বেড কভার পরিবর্তন করতে হবে। এতে শুধু ঘর নয়
আপনার মন মানসিকতা অনেক বেশি ফ্রেশ লাগবে।
রান্নাঘরের এক সাইডে ফ্যান চালিয়ে রাখুন তাহলে দেখবেন ঘরের ভিতরে অনেক বেশি
বাতাস ঢুকবে ও গরমের ভাবটা বেরিয়ে যাবে। রাতে শোবার সময় অবশ্যই জানালা খুলে
রাখবেন এতে করে বাইরের বাতাস ঘরে প্রবেশ করে এবং খুব সহজে ঘর ঠান্ডা হয়ে যায়।
বাড়ির ছাদের পড়ে যদি গাছ লাগান তাহলে চারিপাশে ছায়া হয়ে থাকবে এবং গাছের
ছায়া আপনার ঘরকে অনেক বেশি ঠান্ডা করে রাখবে। এভাবেই আপনি খুব সহজে গরমে ঘর
ঠান্ডা রাখতে পারবেন।
লেখকের মন্তব্য
আজকে আমরা জেনে গেছি গরমে অতিরিক্ত গরম কমানোর উপায় এ ছাড়াও শরীরে অতিরিক্ত গরম
লাগার লক্ষণ শরীরে গরম কমানোর উপায় বিভিন্ন ধরনের গরম কমানোর উপায় সম্পর্কে
আমরা জেনে গেছি। গ্রীষ্ম কালে আমরা সবাই জানি যে প্রচন্ড গরম পড়ে। আরে গরমের
কারণে আমাদের অনেকের নাজেহাল অবস্থা হয়ে যায়। গরম থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই
আপনাকে প্রচুর পরিমাণে ফল খেতে হবে ও পানি পান করতে হবে যাতে আমাদের শরীরে পানি
শূন্যতা না হয়ে যায়।
এছাড়াও গরমের সময় চেষ্টা করতে হবে যাতে বাইরে বেশি না যেতে হয়। তাহলে আপনি গরম
খুব সহজে কমাতে পারবেন। এছাড়াও আমাদের পুরো পোস্টের মধ্যে গরম কমানোর বিভিন্ন
ধরনের উপায় সম্পর্কে জানানো আছে। আজকের আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লাগে তবে
প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য পেতে আমার ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। এবং আপনাদের কোন
মন্তব্য থাকলে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
Setu24 নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url