মস্তিষ্কের ক্ষতি হলে কি কি সমস্যা দেখা দেয়
মস্তিষ্কের ক্ষতি হলে কি কি সমস্যা দেখা দেয় এইটা হয়তো আমাদের মাঝে অনেকে জানে না আবার মস্তিষ্কের কাজ কি এই সম্পর্কেও অনেকের ধারণা থাকে না। আজকে আমরা আপনাদেরকে জানাবো মস্তিষ্কের ক্ষতি সম্পর্কে। আর জানতে হলে পুরো পোস্টটি আপনাকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খুব মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন।
মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে যদি কোন আঘাত সংক্রমণ বা মস্তিষ্কের কোষ ধ্বংস হয় তাহলে। মস্তিষ্কের ক্ষতির প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোন লক্ষণ দেখা যায় না। সময়ের সাথে সাথে সমস্যা বাড়তে থাকে ঠিক সে সময়ে মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তন ঘটতে পারে।
ভূমিকা
মস্তিষ্কের সমস্যা হল ব্রেন ইনজুরি মস্তিষ্কের কোষ গুলোকে ধ্বংস করে। আপনার যদি মস্তিষ্কে ক্ষতি হয় সেক্ষেত্রে আপনার মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, খিচুনি, চোখে ঝাপসা দেখা, দুর্বলতা এইসব ধরনের লক্ষণ দেখা দিবে ঠিক তখনই আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার মস্তিষ্কে ক্ষতি হয়েছে। আমাদের দেহের সকল কাজ নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্ক আর মস্তিষ্কে যদি কোন ধরনের সমস্যা হয় তাহলে আমাদের অনেক ক্ষতি হতে পারে। অনেকের দেখা যায় যে ব্রেন ড্যামেজ হয়ে গেছে। ব্রেন ড্যামেজ বলতে আমরা মস্তিষ্কের আঘাত পাওয়াকে বোঝায় বা মস্তিষ্কের ক্ষতি হওয়া।
মস্তিষ্কের ক্ষতি হলে কি কি সমস্যা দেখা দেয়
মস্তিষ্কের ক্ষতি সাধারণত বুঝতে পারা যায় না যদি মস্তিষ্কে কোন আঘাত সংক্রমণ থেকে থাকে সেক্ষেত্র দেখা যায় মস্তিষ্ক সব ক্ষতি হতে পারে। তবে মস্তিষ্ক ক্ষয়ের প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোন লক্ষণ দেখা যায় না। কিন্তু পরে আস্তে আস্তে যখন তা বাড়তে থাকে মানসিকও শারীরিক পরিবর্তন ঘটতে পারে। অনেক ধরনের মস্তিষ্ক ক্ষত রয়েছে বড় থেকে ছোট।
মস্তিষ্কের ক্ষত হলো মস্তিষ্কের এক ধরনের আঘাত বা ক্ষতি এটি আপনার মস্তিষ্কে যে কোন অংশে হতে পারে। যেকোনো রোগের কারণে হতে পারে অথবা যদি কোন আঘাত থাকে তাহলে এটি হতে পারে। প্রত্যেক ধরনের মস্তিষ্কের ক্ষত আলাদা আলাদা থাকে। এটি মস্তিষ্কে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে আসুন তাহলে আমরা আজকে জানবো মস্তিষ্কে ক্ষতি হলে কি কি ধরনের সমস্যা হতে পারে।
- খুদা কম লাগবে
- বমি বমি ভাব হবে
- স্মৃতিশক্তি কমে যাবে
- ঘাড় ও মাথা ব্যথা করবে বা শক্ত হয়ে যাবে
- খিচুনি হবে
- শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অনিচ্ছুকৃত নড়াচড়া
- শ্রবণশক্তি প্রতিবন্ধী
- চোখে ঝাপসা দেখা
- মস্তিষ্কের কাজ কি
দেহের সকল প্রকার কার্যাবলী নিয়ন্ত্রণ করে থাকে মস্তিষ্ক। এক কথায় বলা যায় যে পানি জগতের মধ্যে মানব মস্তিষ্ক সবচেয়ে জটিল। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মস্তিষ্কের আয়তন প্রায় ১৫০০ সি সি ও মহিলাদের প্রায় ১৩০০ সিসি। মানব ভ্রমণের প্রাথমিক তিনটি অংশ নিয়ে মস্তিষ্কের অবস্থা গঠিত থাকে। পূর্ণাঙ্গ মানুষের এটি আরো জটিল রূপ ধারণ করতে পারে বিভিন্ন অংশে বিভক্ত হয় মানুষের মস্তিষ্কে প্রধান তিনটি ভাগে ভাগ করা হয় যথা
- অগ্রমস্তিষ্ক (Fore brain)
- মধ্যমস্তিষ্ক (Mid brain)
- পশ্চৎমস্তিষ্ক (Hind brain)
- সংবেদী অঙ্গ থেকে আসা অনুভূতিগুলোকে গ্রহণ ও বিশ্লেষণ করে।
- চিন্তা বুদ্ধি ইচ্ছা শক্তি মানসিক বোধের নিয়ন্ত্রণ করে
- সব পেশির কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে
- বাকশক্তি নিয়ন্ত্রণ করে
মধ্যমস্তিষ্কের কাজ
- এটি অগ্র ও পশ্চাৎমস্তিষ্কের মধ্যে যোগসূত্র রচনা করে
- শ্রবণ ও দর্শন তথ্যের সমন্বয় ঘটায়
পশ্চাৎমস্তিষ্কের কাজ
- ওই ঠিক চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করে
- দেহের ভার বজায় রাখে
- দিকনির্দেশনা বজায় রাখে
- ঐচ্ছিক পেশির পেশি টান নিয়ন্ত্রণ করে
ব্রেন ড্যামেজ কি
ব্রেন ড্যামেজ বলতে মস্তিষ্কের আঘাতকে বোঝানো হয়। মস্তিষ্কের কোষ গুলির কোনরকম ক্ষতি হওয়া তার থেকে কোষগুলির মৃত্যু হওয়া ব্রেন ড্যামেজ। ব্রেন ড্যামেজ আপনার ভিতরের আঘাত অথবা বাইরের আঘাত থেকে ঘটতে পারে। মস্তিষ্ক হল সমস্ত শরীরের কিয়া নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র সেজন্য মস্তিষ্ক যে কোন রকম আঘাত শরীরে কার্যকারিতা প্রবাহিত করতে পারে।
মস্তিষ্কের আঘাতগুলো হালকা মাঝারি ও তীব্র হতে পারে অনেক সময় মারাত্মক ও হতে পারে। অনেক সময় খেয়াল করা যায় যে মস্তিষ্কের যে অংশে আঘাত লেগেছে সে আঘাতগুলি উপসর্গগুলি তার উপরে নির্ভর করে আর এই উপসর্গগুলিকে শ্রেণীভুক্ত করা যেতে পারে। শারীরিক, আচরণগত, জ্ঞানীয় ও ইন্দ্রিয়লব্ধ।
শারীরিক উৎসর্গগুলির অন্তর্ভুক্ত হলো
- তীব্র মাথাব্যথা
- খিচুনি
- চেতনা হারানো
- ঘুমের সমস্যা
- আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা
- পক্ষাঘাত
আচরণগত উপসর্গ গুলির অন্তর্ভুক্ত হলো
- উত্তেজিত
- আলস্য
- মানসিক চাপ
- বিরক্তি
জ্ঞানীও উপসর্গগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হলো
- সিদ্ধান্ত নেয়ার অভাব
- স্মৃতির হাস
- চিন্তাধারা প্রকাশে অসুবিধা
- বুঝতে সমস্যা
- মনোযোগের অভাব
ইন্দ্রিয়লব্ধ উপসর্গগুলির অন্তর্ভুক্ত হলো
- দৃষ্টি শ্রবণ
- গন্ধের পরিবর্তন
- ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা হ্রাস
- ভারসাম্যর অসুবিধা
- চিনতে না পারা
মস্তিষ্কের স্নায়ু শক্তিশালী করার উপায়
অনেক মানুষ আছে যাদের বয়সের সাথে সাথে স্মৃতিশক্তির লোভ পায় এমনকি যুক্তি দেওয়ার সক্ষমতা ও কমে আসে অনেক বেশি। আমাদের সব সময় উচিত মস্তিষ্ককে শান্ত রাখা অতিরিক্ত মানসিক চাপ কমানো।।তবে আমরা আজকে জানবো মস্তিষ্কের স্নায়ু শক্তিশালী করার উপায় সম্পর্কে।
ব্যায়াম শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের উন্নতি ঘটে। ব্যায়ামের কারণে মস্তিষ্কের সাইন্যাপসিস যে অংশে দুটি কোষের নিউরনের মধ্যে স্নায়বিক বৈদ্যুতিক স্পন্দন আদান-প্রদান ঘটে তা বেড়ে যায়। আর এজন্যই মস্তিষ্কে আরও বেশি মনোযোগ স্থাপিত হয় মস্তিষ্কে অতিরিক্ত কোষ গঠিত হয়। আপনি যদি খোলা জায়গায় শরীরচর্চা করতে চান তাহলে এটি আপনার জন্য আরও বেশি ভালো হবে। কারণ এতে আপনি বেশি পরিমাণে ভিটামিন ডি শোষণ করতে পারবেন।
সঠিক খাবার আপনি প্রতিদিন যে পরিমাণে গ্লুকোজ গ্রহণ করেন তার অধেক শতাংশ সরাসরি আপনার মস্তিষ্ক যায়। এ কারণে আপনার মস্তিষ্ক কার্যক্ষমতা নির্ভর করে আপনার দেহের গ্লুকোজের উপর। আপনার দেহে যদি গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক না থাকে তাহলে আপনার মস্তিষ্ক অনেকটাই কুয়াশাচ্ছন্ন বা ঝাপসা হতে পারে। আমরা যখন আমাদের পছন্দের খাবার খায় তখন আমাদের মস্তিষ্কে ডোকামী নামে এক ধরনের রাসায়নিক নির্গত হয় এর জন্য আমরা সবসময় শান্তি অনুভব করি।
ব্যস্ততা থেকে অবসর নিন স্বল্প মাত্রায় মানসিক চাপ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বড় প্রভাব ফেলতে পারে এতে বিপদে সময় জরুরি প্রয়োজন পরিস্থিতি দুটোই মোকাবেলা করার শক্তি পাওয়া যায়। দীর্ঘ সময় মানসিক চাপ উদ্বেগ মস্তিষ্কের জন্য প্রভাব ফেলে। সেজন্য কাজের ফাঁকে অবসর সময় বের করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং মস্তিষ্কের শান্ত করাটা কঠিন হয়ে যায় তাহলে ব্যায়াম কিংবা মাইন্ড মাইন্ডফুলনেস চর্চার সাহায্য নিতে পারেন। এগুলা আপনার দেহের স্ট্রেস হরমোন কমাতে সাহায্য করে।
নিউরোলজি রোগের লক্ষণ কি
নিউরোলজি যার মধ্য বিভিন্ন ধরনের রোগ এবং ব্যাধি অন্তর্ভুক্ত কোষ গুলোকে প্রবাহিত করে। আমরা হয়তোবা জানি না নিউরোলজি রোগের লক্ষণ কি? এই রোগের সাধারণ কয়েকটি লক্ষণ আছে যেগুলো হচ্ছে বেশি দুর্বল হয়ে যাওয়া অপুষ্টির অভাবে বেশি ক্ষয় এ ধরনের সমস্যা দেখা যায়। এছাড়াও আরো কয়েকটি সমস্যা নিউরোলজি রোগের লক্ষণ হতে পারে যেমন
- ব্রেন টিউমার
- স্ট্রোক
- পার্কিনসন রোগ
- মাইগ্রেনের ব্যথা
- মেরুদন্ডের রোগ
- এপিলেপসি
লেখকের শেষ কথা
আপনারা হয়তোবা এত সময় বুঝতে পারছেন যে মস্তিষ্কের ক্ষতি হলে কি কি সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া মস্তিষ্কের কাজ কি মস্তিষ্কের স্নায়ু শক্তিশালী করার উপায় ব্রেই ড্যামেজ কি এগুলো আমাদের মাঝে অনেকের অজানা ছিল। তবে আপনি যদি আমাদের পুরো পোস্টটা পড়ে থাকেন তাহলে মস্তিষ্কের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা কথা জানতে পারবেন। আশা করি আপনি পোস্টটা পুরোপুরে অনেক উপকৃত হবেন। আজকের লেখা আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লাগে তবে প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য পেতে আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। এবং আপনাদের যদি কোন মন্তব্য থাকে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
Setu24 নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url