ব্লাড সুগার কত হলে ডায়াবেটিস হয়

আজকে আমরা জানবো ব্লাড সুগার কত হলে ডায়াবেটিস হয় ও ভরা পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল। আর ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে পুরো পোস্টটি পড়তে হবে খুব মনোযোগ সহকারে। তাহলে আপনি ডায়াবেটিস সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য জানতে পারবেন আমাদের এই পোস্টটি আশা করি আপনার অনেক বেশি উপকারে আসবে।
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা আপনার সুগারের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়। ইনসুলিন নামের একটি হরমোন আমাদের রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে রাখতে সাহায্য করে।

ভূমিকা

আজকাল ঘরে ঘরে ছেয়ে যাচ্ছে ডায়াবেটিস মতন একটি জটিল রোগ। একবার যদি ডায়াবেটিকস হয় তাহলে সারাজীবন তা পিছু ছাড়ে না এই রোগে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তবে এই রোগের কোন সহজ প্রতিকার খুঁজে পাওয়া যায়নি। আগে সময় দেখা যেত যে বয়স্ক মানুষরা বেশি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হত কিন্তু এখন দেখা যায় শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক সবাই ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়। আর এর জন্য আমাদের উচিত মাঝেমধ্যে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে নেওয়া। আমাদের রক্তে যদি সুগারের মাত্রা বেড়ে যায় তাহলে ডায়াবেটিকস হতে পারে।

ব্লাড সুগার কত হলে ডায়াবেটিস হয়

আপনার সুগারের মাত্রা যদি ৭ পয়েন্টের ওপরে চলে যায় তাহলে আপনি বুঝবেন যে আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে। ৪০ থেকে ৪৫ বছরের বয়সী বয়সীরা এ রোগে আক্রান্ত হলেও এখন দেখা যায় যে নবজাতক থেকে শুরু করে যুবকরাও এ রোগের শিকার হচ্ছেন। যখন রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে ঠিক সে সময়ে এই ভয়ংকর রোগ হবে ডায়াবেটিস। যাদের বয়স ১৮ বছরের বেশি তাদের খাবার  দুই ঘন্টা পর রক্তে শর্করার মাত্রা ১৪০ মিলিগ্রাম প্রতি ডেসিলিটার হওয়া ভালো।

এর বেশি যদি হয় তাহলে আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে। ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সের যদি তাদের ১৫০ এর কম থাকে তাহলে ভালো। এর বেশি হলে তাদের ডায়াবেটিস হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। আপনার যদি ৪০ বছর পার হয়ে যায় তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত রক্ত পরীক্ষা করা উচিত কারণ এই বয়সে  ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। তাই সময় থাকতে আপনাকে ডায়াবেটিস চেক করে নিতে হবে।

আপনার যদি ডায়াবেটিস হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনাকে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। পাশাপাশি হাঁটাচলা শারীরিক শ্রম বাড়াতে হবে তেলে ভাজা খাবার ও মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। ডায়াবেটিস দুইভাবে মাপা যায় একটি হচ্ছে খালি পেটে ও ভরা পেটে সকালে যদি ৭ mmol বা ১২৬ এর বেশি হয় তাহলে আপনি ধরে নিবেন আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে। খাবার দুই ঘন্টা পর যদি আপনার রক্তে সুগারের লেভেল যদি ১১.১ mmol এর চেয়ে বেশি হয় অথবা ২০০ বেশি হলে তাহলে ধরে নিতে হবে আপনার ডায়াবেটিস আছে বা আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন।

ভরা পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল

ভরা পেটে সুগারের মাত্রা যদি ১৩০ থেকে ১৪০ বা ১৫০ এর মধ্যে থাকলে চিন্তার বড় একটা কারণ নেই বলেই মনে করা হয়। ভরা পেটে সুগারের মাত্রা যদি ১১ পয়েন্ট থাকে তাহলে ডায়াবেটিস নরমাল বলে ধরে নেয়া হয়। এছাড়াও যদি আপনার রক্তের সুগার লেভেল ১১.১ এর বেশি থাকে তাকে ডায়াবেটিস ধরা হয় এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া খুবই জরুরী। ডায়াবেটিস হওয়ার সাথে সাথেই চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। তাহলে ডায়াবেটিসের সাথে অন্যান্য রোগের ঝুঁকিও অনেক বেশি কমে যায়।

খালি পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল

খালি পেটে আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা যদি ৫.৫ পয়েন্টের আশেপাশে থাকে তাহলে এইটা নরমাল বলে ধরে নেয়া হয়। আর যদি দেখা যায় ৫.৫ থেকে ৬.৯ এর মধ্যে চলে যায় তাহলে এ অবস্থায় কে বলা হয় প্রি ডায়াবেটিস। ৭ পয়েন্ট এর ওপরে চলে গেলে আমরা তাকে ডায়াবেটিস বলি। যদি দেখা যায় যে খালি পেটে সুগারের মাত্রা ৮০ থেকে ৯০ হয় তাহলে চিন্তার একটি বড় কারণ বলে মনে করা হয়। সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং নিয়ম অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে।

ডায়াবেটিস কত হলে বিপদজনক

অনেক মানুষ আছে তারা জানতে চাই যে ডায়াবেটিস কত হলে তা বিপদজনক হয়ে দাঁড়ায়। কোন পর্যায়ে গেলে ঔষধ খাওয়া শুরু করতে হবে। যাদের নতুন ডায়াবেটিস হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে মাপকাঠি একরকম আর যাদের পুরনো ডায়াবেটিস তাদের ক্ষেত্রে মাপকাঠি টা একটু আলাদা। খালি পেটে রক্তে সুগারের মাত্রা যদি ৮০ থেকে ১০০ মধ্যে থাকে। আর খাবার পর যদি সুগারের মাত্রা ১৪০ এর আশেপাশে থাকে তাহলে চিন্তা করার বড় কোন কারণ নেই।

যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের এই মাপটুকু মেপে রাখাই যথেষ্ট নয়। যারা বহুদিন ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের বাসাতে একটি করে গ্লুকোমিটার থাকা অবশ্যই উচিত। এতে করে আপনি নিজের সুগারের মা-ত্রা নিজে মাপতে পারবেন। যাদের ডায়াবেটিস অনেক পুরনো তাদের সারাদিনে কয়েকবার সুগার মাপাটা সবচেয়ে বেশি ভালো। যদি দেখা যায় কারো খালি পেটে রক্তের সুগারের মাত্রা ৭০ আর ভরা পেটের সুগারের মাত্রা ৪৭০ তাল তাহলে মনে করতে হবে ডায়াবেটিস কন্ট্রোল টা একদমই ঠিক হচ্ছে না।

কিন্তু আবার যদি দেখা যায় কারো খালি পেটে সুগারের মাত্রা ১২০ আর ভরা পেটে ১৮০ এদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস সঠিকভাবে ম্যানেজ হচ্ছে বলে মনে করা হয়। সাধারণভাবে বলা যায় যে খালি পেটে রক্তের সুগারে লেভেল যদি ৮০ থেকে ৯০ আর ভরা পেটে সুগারের মাত্রা যদি ৩০, ১৩০ থেকে ১৪০ বা ১৫০ এর মধ্যে থাকে তাহলে এটা বেশি বিপদজনক হয়ে দাঁড়ায়। সেক্ষেত্রে আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে।

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সবচেয়ে বেশি জরুরী। এটি যদি বেড়ে যায় তাহলে গর্ভবতী মহিলাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। গর্ভা অবস্থায় খালি পেটে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৪.৫ মিলিমোল লিটার থেকে ৫ বা সর্বোচ্চ ৫.৫ মিনি মন লিটার হতে পারে। আর খাওয়া দুই ঘন্টা পরে ৫ থেকে ৬ মিলে মন লিটার হতে পারে । ডায়াবেটিসে আক্রান্ত গর্ভবতী মায়েদের গর্ভাবস্থায় বারো সপ্তাহ পর্যন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। প্রতিদিন অন্তত ৫ মিলিগ্রাম ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট খাওয়া উচিত। এর ফলে জন্মগ্রহণের সময় শিশুর কোন রকমের সমস্যা বা জটিলতা তৈরি হবে না।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আপনারা এত সময় জেনে গেছেন ব্লাড সুগার কত হলে ডায়াবেটিস হয় এছাড়া ভরা পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল। খালি পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে আপনাদের জানা হয়ে গেছে। আপনি যদি আমাদের পুরো পোস্টটা পড়ে থাকেন তাহলে ডায়াবেটিক সম্পর্কে আপনি বিভিন্ন ধরনের তথ্য জানতে পারবেন এবং তা আপনার অনেক উপকারে লাগবে। আজকের লেখা আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লাগে তবে প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য পেতে আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। এবং আপনাদের যদি কোন মন্তব্য থাকে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Setu24 নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url