কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় কী
প্রিয় পাঠক আমাদের মাঝে অনেক মানুষ আছে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যর মতন সমস্যা রয়েছে কিন্তু তারা জানে না কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় কি ও দুধ খেলে কি কষ্টকাঠিন্য দূর হয় এগুলো সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা নেই। আসুন তাহলে আজকে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় জানব। আর জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে পুরো পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খুব মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য হচ্ছে একটি স্বাস্থ্য সমস্যা এই সমস্যাটা অনেকের মাঝে দেখা যায়। মলত্যাগের সময় অনেকক্ষণ কসরত করতে হয় অনেক মানুষকে। তারপরও দেখা যায় যে পায়খানার পর অনেক মানুষের মনে হয় পেট ঠিকমতন পরিষ্কার হয়নি।
ভূমিকা
কোষ্ঠকাঠিন্যর এই সমস্যাটা সৃষ্টি হয় মানসিক চাপ থেকে। যারা ধূমপান করে তাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয় যাদের ওজন অতিরিক্ত বেশি তাদেরও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে সৃষ্টি হয় পাইলস। আপনি যদি চান তাহলে ঘরোয়া উপায়ে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে পারেন এর জন্য আপনাকে গরম দুধ খেতে হবে। দুধ হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য অনেক বেশি উপকারী আর অবশ্যই আপনাকে ফাইবার ও আশ জাতীয় ফলমূল শাকসবজি বেশি বেশি খেতে হবে। তাহলে দেখবেন আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ভালো হয়ে গেছে। কোষ্ঠকাঠিন্য হলে আপনি যদি নিজের খাদ্যভাস ঠিক না রাখেন তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় কি
কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পায়খানা অনেক বেশি শক্ত হয়ে যায় সেজন্য মলত্যাগের সময় অনেক বেশি ব্যথা অনুভব করেন। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে তাদের ৩-৪ দিন পায়খানা হয় না এগুলো হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্যর লক্ষণ। যদি দীর্ঘদিন আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে যায় তাহলে এটি থেকে পাইলস রোগ হয়। কিছু নিয়ম যদি আপনি মেনে চলেন তাহলে দেখা যাবে আপনি কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাবেন।
কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা যখন শুরু হয় তার আগে কিছু লক্ষণ দেখা যায়। পায়খানা অনেক বেশি শুকনো হয় পায়খানা করতে গিয়ে দেখবেন অনেক বেশি কষ্ট হয়। পেট ফাঁপা বমি বমি ভাব পেটে ব্যথা এগুলো সমস্যা যদি হয় তাহলে আপনি বুঝে নেবেন যে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য হয়েছে। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় হচ্ছে আপনাকে আশ ও ফাইবার যুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। ফাইবার ও আঁশ আমাদের পেটের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমাদের পেটকে পরিষ্কার রাখে।
আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ফাইবারের সাথে মিলে পায়খানাকে নরম করে এছাড়াও পরিপাকতন্ত্রের ভেতর দিয়ে পায়খানা চলাচল খুব সহজ হয়। তাই আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন তাহলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হবে না। প্রতিদিন যদি শারীরিক পরিশ্রম ও নিয়ম মেনে ব্যায়াম করেন তাহলে দেখবেন আমাদের পেটের ভিতরে থাকা নাড়ী ভুঁড়ি সচল থাকে এতেও আমাদের পায়খানাও স্বাভাবিক থাকে।
যদি দেখা যায় শারীরিক পরিশ্রমের অভাব হয় সেক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দিবে।কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনাকে দিনে দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে। এছাড়াও শারীরিক ব্যায়াম করা লাগবে আর ফাইবার যুক্ত শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া লাগবে। তাহলে আপনি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
দুধ খেলে কি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়
আমাদের পেট যদি পরিষ্কার থাকে তাহলে দেখা যায় যে অর্ধেক অসুখী দূরে থাকে। বর্তমানে কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সমস্যা যা প্রায় মানুষেরই দেখা যায়। এটি শুধু যে মলত্যাগের সমস্যা এমনটা নয় এর সঙ্গে সৃষ্টি হয় শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। অসুস্থ কর খাদ্যের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয়। আপনি যদি একটু সচেতন ভাবে খাবার খান তাহলে দেখবেন যে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে দেখা দিতে পারে পাইলস ফিশার এছাড়াও বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা যদি হয় তাহলে আপনি ঘরোয়া উপায়ে এর সমাধান খোঁজার চেষ্টা করুন। আর ঘরোয়া উপায়ে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে সমাধান পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে দুধ খেতে হবে। গরম দুধ আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার জন্য অনেক বেশি উপকারী।
এছাড়াও যদি দুধের সঙ্গে রসুন খান তাহলে পেট পরিষ্কার থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কাটিয়ে সুস্থ থাকতে পারবেন যদি আপনি দুধের সঙ্গে রসুন খান। এক গ্লাস দুধের সঙ্গে আপনাকে দুই থেকে তিন কোয়া রসুন মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর আপনি চাইলে দুধের সঙ্গে অল্প একটু হলুদ মিশাতে পারেন এরপর মিশ্রণটি ভালোভাবে গরম করে ফুটিয়ে নিতে হবে।
ঠান্ডা হওয়ার পর পান করুন তাহলে দেখবেন যে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ভালো হয়ে গেছে। রসুন এ থাকে ফাইবার যা আমাদের পেটে হজমের জন্য অনেক বেশি কার্যকরী। রসুন খেলে আমাদের পেটে থাকা যেগুলো উপকারী ব্যাকটেরিয়া রয়েছে সেগুলোর কাজ খুব সহজ হয়ে যায় আর সেজন্যই মল তৈরি হয় সঠিকভাবে।
কোষ্ঠকাঠিন্যের এর লক্ষণ কি
আপনার পায়খানা যদি সপ্তাহে তিনবারের কম হয় তাহলে বুঝে নিবেন যে এটি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য হলে আপনার পায়খানা গুলো শুকনো হয়ে যাবে। এরকম লক্ষণ যদি দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য হয়েছে। এছাড়াও পায়খানা করতে গেলে আপনার অনেক বেশি কষ্ট হবে পেটের ব্যথা অনুভব করবেন। আপনার মনে হবে যে আপনি পায়খানা করার পরও আপনার পেট পরিষ্কার হচ্ছে না। পেট ফাঁপা সমস্যা বমি বমি ভাব এগুলো হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য হয় আপনার খাবারের তালিকায় যদি যথেষ্ট পরিমাণে আশ না থাকে বা ফাইবার না থাকে তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দিবে। আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করেন সে ক্ষেত্রেও দেখা দিবে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা। শুয়ে বসে থাকলে শরীরের পরিশ্রমের অনেক বেশি অভাব হয় আর যখনই শরীরের পরিশ্রমের অভাব হবে ঠিক তখনই আপনার এ ধরনের সমস্যা বেশি দেখা দিবে। সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা এগুলোর জন্যই বেশি সৃষ্টি হয়। এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার আগে এসব লক্ষণ খেয়াল করা যায়।
কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কখন হাঁসপাতালে যেতে হয়
কোষ্ঠকাঠিন্যর দেখা দেয় যখন আপনার শরীরে আঁশ ও ফাইবারের অভাব হয় আশ ফাইবারের অভাব যদি হয় তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হবে। কোষ্ঠকাঠিন্য হলে এটির প্রভাব শরীলে তো পরে তার সাথে সাথে মনেও এর প্রভাব পড়ে। যখন কোন ব্যক্তি সহজে মলত্যাগ করতে সক্ষম হয় না এক থেকে দুই দিন পর পর মলত্যাগ করে তখন এটাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়। সপ্তাহে যদি দুই থেকে তিনবারের কম পায়খানা হয় সেটাই কোষ্ঠকাঠিন্য।
যেকোনো বয়সের মানুষেরই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হতে পারে। তবে বয়স্ক মানুষরা এই সমস্যায় বেশি ভোগেন। পুরুষের চেয়ে মেয়েদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা লক্ষণ বেশি দেখা যায়। যাদের ওজন বেশি তাদেরও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা থেকে সৃষ্টি হয় পায়েল ফিশার পেট ফাঁপা অরুচি এই ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা যত বেশি দীর্ঘ হবে রোগী ঠিক তত বেশি দুর্বল হয়ে পড়বে।
বেশিদিনের যদি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয় তাহলে চুলকানি মুখে ঘা মেস্তার মতন সমস্যা হতে পারে। অনেক বেশি চাপ পড়তে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো করার প্রধান চিকিৎসা হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস যদি দেখেন ফাইবার আশ জাতীয় খাবার খাওয়ার পরও আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘস্থায়ী হয়। সে ক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। যদি মলদ্বার দীর্ঘদিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে তাহলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। সেজন্য অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
লেখকের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আপনারা হয়তোবা এত সময় জেনে গেছেন কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায় কি দুধ খেলে কি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্যর লক্ষণ কি এগুলো বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে আপনাদের জানা হয়ে গেছে। কোষ্ঠকাঠিন্য এই কথাটির সাথে আমরা কম বেশি সবাই পরিচিত। প্রায় সব বয়সে মানুষেরই এই কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা সৃষ্টি হয়।
আর কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই ফাইবার আঁশ জাতীয় খাবার খেতে হবে। আপনি যদি খাদ্যভাস ঠিক রাখেন তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা খুব সহজেই দূর হয়ে যাবে। আজকের লেখা আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লাগে তবে প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য পেতে আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। এবং আপনাদের যদি কোন মন্তব্য থাকে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
Setu24 নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url