গরমে চুলের যত্ন কিভাবে নেব

আমাদের মাঝে অনেকে আছে তাদের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন থাকে যেমন গরমে চুলের যত্নে কিভাবে নেব ও গরমে কতবার চুল ধোয়া উচিত এই সম্পর্কে অনেকের ধারণা থাকে না। আপনি যদি চুল সম্পর্কে তথ্য জানতে চান তাহলে আজকের লেখা আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে। আর পুরো পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যদি খুব মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে চুলের যত্ন নেওয়ার বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন।
গরমে চুলের যত্ন কিভাবে নেব
সাধারণত আমাদের ত্বক রোদের তাপে অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে যায় আর রুক্ষ ত্বকে যেমন সানস্ক্রিম লাগানো জরুরী ঠিক তেমনি আমাদের চুল ও রোদে অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে যায়। আর এর থেকে বাঁচতে হলে চুলের যত্ন নেওয়াটাও অনেক বেশি জরুরী।

ভূমিকা

গরমের সময় আমরা কম বেশি সবাই চুল নিয়ে অনেক বেশি দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। গরমের সময় মাথা ঘেমে চুল অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। দেখা যায় যে চুল একটু টানলেই অনেকগুলো উঠে আসে। এছাড়াও গরমকালে চুলে অনেক বেশি ধুলাবালি জমে। আর ধুলোবালি জমে আমাদের চুলকে অনেক বেশি রুক্ষ করে দেয়। যদি দেখি যে চুলে অনেক বেশি ধুলোবালি জমেছে সে ক্ষেত্রে আমাদের চুল ধুয়ে ফেলা ভালো শ্যাম্পু করে। তবে সপ্তাহে তিন দিনের বেশি শ্যাম্পু করা কখনোই চুলের জন্য ভালো না। চুল যদি পরিস্কার থাকে তাহলে চুলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয় না এবং চুল ঝরে পড়া কমে যায় চুলের খুশকি ও দূর হয়ে যায়।

গরমে চুলের যত্নে কিভাবে নেব

গরমের সময় আসলে আমরা চুল নিয়ে অনেক বেশি চিন্তায় পড়ে যাই। গরমের সময় দেখা যায় যে ধুলোবালি ঘাম তার সাথে সাথে চুল অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে যায়। এছাড়াও গরমের সময় দেখা যায় যে চুলে অনেক বেশি খুশি হয়। চুলের আগা ফেটে যায় এবং চুল রুক্ষ হয়ে পড়ে চুলের আদ্রতা অনেক বেশি কমে যায়। আসুন তাহলে আমরা আজকে জানবো গরমে চুলের যত্ন কিভাবে নিব। গরমের সময় চুল কখনো খোলা রাখবেন না চুল খোলা রাখলে দেখা যায় অনেক বেশি অশান্তি লাগে।

চুল যদি বাঁধা থাকে তাহলে সূর্যের তাপটা পুরোপুরি চুলে লাগে না আর সে জন্য চুল রুক্ষ হয় না। চুলকে ভালো রাখতে হলে অবশ্যই আপনাকে শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। চুলে যদি শ্যাম্পু ব্যবহার করা হয় তাহলে চুল অনেক বেশি পরিষ্কার হয়ে যায় চুলে লেগে থাকা ধুলোবালি শ্যামপুর সাথে সাথে ধুয়ে যায়। আর গরমের সময় বিশেষ করে চুলের আদ্রতা ধরে রাখাটা সবচেয়ে বেশি জরুরী। গরমের করণে অনেক সময় দেখা যায় যে ঘামের কারণে চুল চেটে হয়ে যায়।

আর সেজন্য মনে হয় যে চুলে প্রতিদিনই শ্যাম্পু করি কিন্তু সপ্তাহে তিন দিনের বেশি কখনোই শ্যাম্পু করা উচিত না। আপনি চাইলে চুলে ঘরোয়া কিছু প্যাক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে দেখবেন চুলের জন্য তা অনেক বেশি উপকারী হবে। আপনার চুলে কখনোই আপনি ঘাম জমতে দিবে না ঘাম জমলে চুল অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে যায় এবং প্রচুর পরিমাণে চুল পড়ে। সেজন্য আমাদের উচিত গরমের সময় কখনোই আমরা চুলে ঘাম জমতে দিব না। যখনই দেখব যে চুলে ঘাম জমছে ঠিক সে সময় চুল ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলব।

ভেজা চুল কখনোই বাধবেন না ভেজা চুল যদি বেঁধে রাখেন তাহলে তা চুলের জন্য অনেক বেশি ক্ষতি হয়। ভেজা চুল আলগা করে রেখে দিতে হবে তারপর যখন শুকিয়ে যাবে তখন খুব টাইট করে না বেঁধে হালকা টাইট করে চুল বাঁধতে হবে। সাধারণ সময়ের থেকে গরমের সময় মানুষ চুল নিয়ে একটু বেশি চিন্তিত থাকে মাথা ঘেমে দেখা যায় চুল একবারে বিশ্রী হয়ে যায়। এমনকি চুল থেকে দুর্গন্ধ বের হয় চুলে অনেক বেশি ধুলাবালি জমে।

আর চুলে যদি ধুলাবালি জমে তাহলে চুল অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে যায় এটি একেবারেই চুলের জন্য খারাপ। বাতাসের আদ্রতা যদি বেশি থাকে তাহলে দেখা যায় যে চুল নেতিয়ে পড়ে। গরম থেকে বাঁচতে হলে আপনাকে চুলে হেয়ার প্যাক ব্যবহার করতে হবে। আর আপনি যদি ঘরোয়া হেয়ার প্যাক ব্যবহার করেন তা চুলের জন্য অনেক বেশি উপকারী হবে।

গরমে কতবার চুল ধোয়া উচিত

সুন্দর চুল পেতে কেনা চাই সবাই সুন্দর ও ঘন কালো চুল চাই। তবে আপনাকে সুন্দর চুল পেতে হলে চুলের যত্ন নিতে হবে। আপনি যদি সঠিক নিয়মে চুনের যত্ন নেন তাহলে দেখবেন আপনার চুল অনেক বেশি ঘন হয়ে গেছে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বেড়ে গেছে। আসুন তাহলে আমরা আজকে জেনে নিব গরমে কতবার চুল ধোয়া উচিত। আমাদের এক এক মানুষের একেক রকমের চুল হয় যেমন কোঁকড়া চুল, ফ্রিজি চুল, স্ট্রেট চুল ও ওয়েভি চুল।

কোঁকড়া চুলের চেয়ে সোজা পাতলা চুল বেশি বার করে ধুতে হয়। কারণ সোজা চুল খুব সহজেই সিবামে ভরে যায় সেজন্য খুব দ্রুত তেলতেলে হয়ে যায়। কোঁকড়া চুল নরম থাকার জন্য তেল অনেক বেশি দরকারি। কোঁকড়া চুল বেশি না ধোয়াই ভালো। গরমের সময় মাথা ঘেমে চিটচিটে হয়ে যায় সেজন্য দেখা যায় অনেকে অনেক বার করে চুল ধুয় বা চুলে শ্যাম্পু করে। কিন্তু চুলে অতিরিক্ত শ্যাম্পু করা একদমই ভালো নয়। গরমের সময় আপনি দুই থেকে তিনবার চুল ধুতে পারবেন। 

এছাড়াও আপনি যদি সারাদিন বাইরে থাকেন ধুলোবালির মধ্যে থাকেন তাহলে চুলে ময়লা জমবে। আর সেই সময় আপনি বাসাতে এসে একবার ‍চুলে শ্যাম্পু করে নিতে পারেন। আমরা চুলে বিভিন্ন ধরনের জিনিস লাগিয়ে রাখি চুলের স্টাইল এর জন্য তবে সেটা আপনার কাজ শেষ হয়ে গেলে চুল ধুয়ে ফেলবেন তাহলে এগুলো চুলের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর এমনিতে গরমের সময় দেখা যায় চুল অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে যায় সেজন্য মানুষ বারবার চুল ধুয়ে ফেলে কিন্তু এটি চুলের জন্য অনেক ক্ষতিকর হয়। সেজন্য গরমের দুবার থেকে তিনবার চুল ধুতে পারবেন।

গরম থেকে চুল রক্ষার উপায়

গ্রীস্মের এই প্রচন্ড রোদের তাপে আমাদের চুলের যত্ন নেওয়াটা অনেক বেশি জরুরী। সূর্যের তাপে চুল অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। গরমের সময় দেখা যায় যে আমাদের মাথা ঘেমে যাই এবং চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়ে একটু টানলাতেই চুল উঠে আসে। এছাড়াও চুল দুর্বল হয়ে ভেঙে পড়ে সেই সাথে চুলের জেল্লা অনেক বেশি হারিয়ে যায় দেখা যায় যে রুক্ষ হয়ে গেছে একদম ঝাড়ুর মতো। আসুন তাহলে আমরা আজকে জানব গরম থেকে চুল রক্ষার উপায় সম্পর্কে।

আমরা অনেক সময় চুলের যত্নে পার্লারে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের ট্রিটমেন্ট নিয়ে থাকি অনেক টাকা খরচ করে। কিন্তু আপনাকে পার্লারে গিয়ে টাকা খরচ করে চুলের যত্ন নেওয়ার দরকার হবে না বাড়িতে বসেই আপনি অল্প দিনে চুলের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে পারবেন। আপনার চুলে যদি গুরুতর কোন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আপনাকে সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে। গরমে চুল রক্ষার জন্য প্রথমে আপনাকে চুলের স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখতে হবে। চুলের গোড়া যদি পরিষ্কার থাকে তাহলে চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা খুব সহজে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

চুলের রুক্ষ ভাব কমে চুল ঝরে পড়া কমে যায়। সপ্তাহে তিন দিন শ্যাম্পু করবেন এর বেশি শ্যাম্পু করা আমাদের চুলের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। আর অবশ্যই গরমের সময়ে চুলে মশ্চরাইজার যার করতে হবে ময়শ্চরাইজার আমাদের চুলের জন্য অনেক বেশি জরুরী। প্রতিবার শ্যাম্পু করার পর পর আপনি চুলে কন্ডিশনার লাগাবেন এছাড়াও হেয়ার সিরাম ব্যবহার করতে পারেন এতে চুলের জন্য অনেক বেশি ভালো। সপ্তাহে একবার হলেও হেয়ার মাস্ক লাগাবেন চুলে।

রোদ থেকে চুলকে রক্ষা করতে হবে আপনি যদি রোদে বের হন তাহলে চুলে সিরাম লাগিয়ে বের হবেন। এছাড়াও সান ব্লক স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন চুলে। এগুলো আপনার চুলকে রোদ থেকে রক্ষা করবে এবং চুলের জেল্লা ভালো থাকবে। চুল রক্ষার জন্য আপনাকে আপনার খাবারের দিকেও একটু নজর দিতে হবে। প্রতিদিন আপনার খাবারের ভিটামিন ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখুন নিয়মিত শাক-সবজি ফলমূল খান এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খা।ন দৈনিক ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমান এসব নিয়ম যদি আপনি ফলো করেন তাহলে দেখবেন আপনার চুলে গরমে কোন সমস্যা থাকবে না।

চুল নরম ও মসৃণ করার উপায়

আমাদের চুল যদি নরম বা মসৃণ না থাকে তাহলে চুলে হাত দিলে দেখা যায় অনেকগুলো চুল উঠে আসে। কালো চুল লম্বা চুল সবাই চাই আর লম্বা কালো চুল পেতে হলে অবশ্যই চুল হতে হবে নরম ও মসৃণ। চুলে শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে তাহলে চুল অনেক বেশি ভালো থাকবে। চুলকে নরম করার জন্য আপনি চুলে কোন জট রাখা যাবে না চুলের জট থাকলেই বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়।

সেজন্য আপনাকে নারিকেলের তেলের সঙ্গে আমন অয়েল ব্যবহার করতে হবে। আপনি যদি শ্যামপুর পর কন্ডিশনার ব্যবহার করেন তাহলে দেখবেন চুল মসৃণ হয়ে গেছে এমনকি চুলে কোন জট ও থাকে না। আর আপনি কখনোই ভেজা চুল আচরাবেন না ভেজা চুল যদি আঁচড়ানো হয় তাহলে চুল ছিঁড়ে যায়। এজন্য আমাদের উচিত চুল শুকিয়ে গেলে তারপরে আঁচড়ানো। আর গোসলের পর চুল তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে আর চুল যখন শুকিয়ে আসবে ঠিক সেই সময়ে বড় দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করতে হবে চুল আঁচড়ানোর জন্য।

আপনি চাইলে ঘরে বসে  আপনার চুল নরম ও মসৃণ করতে পারেন এর জন্য প্রয়োজন হবে টক দই। দই রয়েছে ল্যাকটিক অ্যাসিড যা আমাদের চুলের তেল ময়লা সরিয়ে দেয় এবং চুল নরম ও মসৃণ করে তোলে খুব সহজেই। যাদের চুলে সমস্যা রয়েছে তারা টক দই ডিপ কন্ডিশনিং হিসাবে ব্যবহার করতে পারে। এতে করে চুলের খুশকি দূর হবে এবং চুলের জেল্লা বেড়ে যাবে। প্রথমে চুলে শ্যাম্পু করে তারপরে চুল শুকিয়ে নিন।

চুল যখন মোটামুটি শুকিয়ে যাবে তখন চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত টক দই মেখে নিয়ে প্রায় ৩০ মিনিট রেখে দিন। যখন ৩০ মিনিট হয়ে যাবে তারপরে হালকা গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন তাহলে দেখবেন চুল নরম ও মসৃণ হয়ে গেছে। এছাড়া আপনি অ্যালোভেরা জেল চুলে ব্যবহার করতে পারেন চুলের যত্নে অ্যালোভেরা খুবই কার্যকারী একটি উপাদান। অ্যালোভেরা জেলে রয়েছে জলীয় উপাদান যা আমাদের চুলের আর্দ্রতা অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয়।

একটি পাত্রে এলোভেরা কেটে আধা কাপের একটু বেশি পরিমাণ জেল বের করে নিন তারপরে একটি চামচ দিয়ে ভালোভাবে পাতলা করে নিতে হবে। তারপর চুলের শ্যাম্পু করে চুল শুকিয়ে নিয়ে চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত এলোভেরা জেল মেখে নিন তারপরে এক থেকে দুইবার করেন তাহলে চুল অনেক নরম ও মসৃণ হয়ে যাবে।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আপনারা হয়তোবা এত সময় জেনে গেছেন গরমে চুলের যত্ন কিভাবে নেব গরমে কতবার চুল ধোয়া উচিত এছাড়াও চুল নরম ও মসৃণ করার উপায় এগুলো সম্পর্কে যদি আপনাদের জানা না থাকে তাহলে এত সময় চুল সম্পর্কে আপনাদের বিভিন্ন ধরনের তথ্য জানা হয়ে গেছে। আমরা সবাই চুলের যত্ন নিই কিন্তু হয়তোবা সঠিকভাবে কিভাবে চুলের যত্ন নিতে হয় এটা অনেকেই জানেনা তবে এমনি সময়ের থেকে গরমকালের চুল অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে পড়ে।

আর রুক্ষ ভাব কমাতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু ঘরোয়া নিয়ম ফলো করতে হবে তাহলে চুলে উজ্জ্বলতা বেড়ে যাবে এবং চুল নরম ও মসৃণ থাকবে। আজকের লেখা আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য পেতে আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন। এবং আপনাদের যদি কোন মন্তব্য থাকে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Setu24 নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url