ধান চাষের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি কোনটি
প্রিয় গ্রাহক আপনি কি ধান চাষের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি কোনটি ও বাংলাদেশের ধান চাষের মৌসুম কোনটি সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। আসুন তাহলে জেনে নিই আজকের আর্টিকেল আপনার জন্যই। ধান হচ্ছে আমাদের বাংলাদেশর প্রধান খাদ্যশস্য। ধান চাষের জন্য আপনাকে হবে বীজ যাক দিতে হবে ও আদর্শ বিজ তৈরি করতে হবে। তিন মৌসুমে ধান চাষ করা হয় বাংলাদেশে জ্যৈষ্ঠ আশার শ্রাবণ ভাদ্র এর মধ্যে আউশ বোরো ও আমন ধান চাষ করা হয়।
বাংলাদেশী প্রায় তিনটি মৌসুমে ধান চাষ করা হয়। তাহলে ভালো ফসল পাওয়া যায় ধান কে আমাদের প্রধান শস্য খাদ্য হিসেবে আমরা চিনি।
ভূমিকা
ধানের সাথে আমাদের দেশের বিভিন্ন অর্থনীতি জড়িয়ে আছে। এছাড়াও আমাদের দেশে নদী-নালা হাট বাজার কলকারখানা ইত্যাদির কারণে আমাদের জমি জায়গার পরিমাণ অনেক বেশি কমে এসেছে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগের কারণে জোয়ার ভাটা ভেঙ্গে বাড়িঘর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আর সে থেকে আমাদের জমি অনেক বেশি কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ধান উৎপন্ন হয়। এ থেকে সাংস্কৃতিক ও অর্থনীতি দেশের জড়িয়ে রয়েছে। ধান আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য। বাংলাদেশের ধান চাষের মৌসুমে হচ্ছে জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় শ্রাবণ-ভাদ্র অগ্রহায়ণ ও পৌষ। আউশ আমন বোর ইরি ধান চাষ করা হয়।
ধান চাষের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি কোনটি
কৃষকরা এখন ধান চাষ করে বেশি ভালো ফসল পায় না। সেজন্য অনেকে আবার ধান চাষ করতে চাচ্ছেন না কারণ তারা ভালো ফসল পাচ্ছে না সেজন্য। কারণ তারা যত টাকা ধানের পিছনে খরচ করছে সে অনুযায়ী ফলন একদমই পাচ্ছেন না ফলন অনেক বেশি কম পাচ্ছে। আজকে আমরা ধান চাষের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি কোনটি সেই সম্পর্কে জানব। ধান হচ্ছে আমাদের বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য।
বাংলাদেশের প্রধান ফসল হিসেবে আমরা ধান কে চিনি। ধান আমাদের অর্থনৈতিক শিল্প। আমাদের দেশে ধানের ফলন ৪.১ হেক্টর টন। এছাড়া বাইরের দেশে তা ৫ থেকে ৬ টন। এক কথায় বলা যায় ভালো জাতের ভালো বীজ। ধান চাষের প্রথমে আপনাকে বীজ বাছাই করতে হবে তারপরে বীজ দাগ দিতে হবে। এছাড়া বীজ তোলার স্থান নির্বাচন করতে হবে। বীজতলার বীজ বপন ইত্যাদি এগুলো কাজ আপনাকে সর্ব প্রথমে করতে হবে।
আপনার যদি ধানের জমিতে জিংকের ঘাটতি থাকে তাহলে আপনি ভালো ফলন পাবেন না। ধানের যে সব অনুখাদ্য রয়েছে তার মধ্যে প্রথম হচ্ছে জিংক। এটি ধানের জমিতে অল্প পরিমাণে ব্যবহার করতে হয় যদি জিংক ব্যবহার করেন তাহলে পরবর্তীতে ভালো ফলন পাবেন। আপনি যদি লোগো পদ্ধতি ধান চাষ করেন তাহলে ধানের ভয়া আলো ফলন পাবেন ধানের সারির মাঝে ফাঁকা রাখাই হচ্ছে লোগো পদ্ধতি।
চারা রোপণের সময় আপনি ১০ থেকে ১১ টা সারির পরে একটি সারি বাদ দিয়ে তারপরে আবার অন্য সারির লাগাতে হবে। আপনি যদি এই পদ্ধতিতে সম্পন্ন চারা জমিতে রোপন করে দেন তাহলে ভালো ফলন অবশ্যই পাবেন। ধান চাষের লোগো পদ্ধতির সুবিধা হচ্ছে আপনার ধানে ঘাসফড়িং ও মাজরা পোকা বেশি ক্ষতি করে।
এই পোকাগুলো সাধারণত ছায়াযুক্ত স্থানে বেশি আক্রমণ করে। আপনি যদি এই পদ্ধতি ফলো করেন তাহলে আপনার জমিতে বিভিন্ন ধরনের আগাছা থাকবে না। এছাড়াও আপনাকে সঠিক সার প্রয়োগ করতে হবে পরিচর্যা অনেকটাই তাহলে সহজ হয়ে যাবে। লোগো যুক্ত ভাবে যদি আপনি চারা রোপন করেন তাহলে ইঁদুরের আক্রমণ হয় না অনেক বেশি কম থাকে। ধান চাষের ভালো পদ্ধতি লোগো পদ্ধতিকে বলা হয়।
বাংলাদেশের ধান চাষের মৌসুম কোনটি
বাংলাদেশের ধান চাষের মৌসুম জ্যেষ্ঠ থেকে আষাঢ়, শ্রাবণ থেকে ভাদ্, অগ্রহায়ণ থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি প্রধান তিনটি ধান চাষ করা হয়। আমন আউশ ও বোরো। আমন ধান হেমন্ত কালে হয় আমন মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ধানের জমিতে এই ধান চাষ করা হয়। আমন ধান তিন রকমের হয়ে থাকে। রুপা আমন বোনা আমন ও বাবা আমন।
রুপা আমন এই ধান চাষ করতে হলে প্রথমে চারা রোপণ করে ধান চাষ করা হয় সেজন্য এর নাম রুপা আমন। রুপা আমন জ্যৈষ্ঠ ও আসার মাসে বীজ বোনা হয়। শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে জমিতে ধান বোনা হয় এছাড়া অগ্রহায়ণ ও পৌষ মাসে ধান কাটা হয়।
বোনা আমন এই ধান কে ছিটিয়ে জমিতে বুনতে হয়। বোনা আমন চৈত্র বৈশাখ মাসে মাঠে বীজ বপন করতে হয় ও অগ্রহায়ণ মাসে ধান পাকলে সেই পাকা ধান কেটে নিতে হয়।
বাওয়া আমন সাধারণ তো এই ধান যেখানে অনেক বিল রয়েছে সেখানে চাষ করা হয় বা উৎপন্ন করা হয় সে অঞ্চলে। এটি কে গভীর পানির আমন বলা হয়। এক কথায় বলতে গেলে বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের ধানের চাষ হয়ে থাকে।
প্রতিটি জাতের ধানের স্থায়ী কোনো না কোনো নাম রয়েছে। আসুন তাহলে বেশ কয়েকটি নাম আমরা জেনে নিই গদালাকি, ইন্দ্রশাইন, নাজির শাইল, বাঁশফুল, ভাসা মানিক, রাজাশাইল, দুধসর,ধলা আমন,ক্ষীরাইজালি, লাটশাইন ইত্যাদি। ধানের জাতের নাম এগুলোকে বলা হয় অনেকের কাছে হয়তো বা নামগুলো চেনা আবার অনেকের কাছে নাম গুলো অজানা তবে নিশ্চয়ই এখন জেনে গেছেন ধান জাতের নাম গুলো।
ধান চাষের জন্য উপযোগী মাটি কোনটি
আমাদের মাঝে অনেকেই জানেনা যে ধান চাষের জন্য উপযোগী মাটি কোনটি? আসুন তাহলে জেনে নিই ধান চাষের জন্য উপযোগী মাটি কোনটি। ফসল উৎপাদন করতে হলে মাটির বৈশিষ্ট্য নির্ভর করে, মাটি কে পানি পুষ্টির প্রাকৃতিক উৎস হিসেবে বলা হয়। এক কথায় বলা যায় যে সব মাটিতে সব রকম ফসল জন্মায় না। এটি একটি ফসলের জন্য একেকটি মাটি উপযোগী।
এঁটেল ও দো আঁশ মাটিতে ধান খুব ভালো চাষ হয়। কারণ সেই সময় বিভিন্ন জমি জায়গাতে বা হাওরের পানি জমে আর সেই পানি থেকে ধান ভালো হয়। উঁচু থেকে নিচু সব মাটিতে ধান চাষ করা যায়। ধান চাষ করার জন্য কোন মাটির প্রকারভেদ নাই। মাটিতে যদি জৈব পদার্থ অনেক বেশি কম থাকে সেক্ষেত্রে আপনি কম্পোস্ট ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে খুব তাড়াতাড়ি যোগ্য পদার্থের মাত্রা বাড়ানো যায়।
ফসফরাস পটাশ নাইট্রোজেন ও জিংক মাটির মাত্রা নির্ধারণ করে। প্রয়োজনীয় যদি সার ব্যবহার করেন তারপরে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করা যায়। সবশেষে বলা যায় ১০ মাটি, পলি মাটি ও কাদামাটি ধানের জন্য সবচেয়ে বেশি ভালো। এছাড়াও ধান নদীর পাশে উর্বর মাটিতে সবচেয়ে বেশি ভালো হয় জন্য দোআঁশ মাটি ও এঁটেল মাটি সবচেয়ে বেশি উপযোগী।
বোরো ধান কোন ঋতুতে হয়
শীতের মৌসুমে বোরো ধান চাষ করা হয়। এটি একটি শীতকালীন ধান বলা হয়। ধানের তিনটি প্রকার ভেদ এর মধ্যে প্রথম হচ্ছে বোরো। অনেকে আবার বোরো ধানকে বৈশাখীর ধান বলে। কারণ প্রধান যখন জন্মায় শেষ সময়ে বৃষ্টিপাত অনেক বেশি কম হয় সেজন্য বোরো ধান চাষের পর সেচের পানি দিতে হয়। শীতের সময় বোরো ধান চাষ করা হয় নদীর আশেপাশের জমিতে।
বেলে মাটিতে বোরো ধান চাষ ভালো হয় না। বোরো ধান চাষ করার আগে আপনাকে আধুনিক জাত বোরো নির্বাচন করতে হবে। আপনি যদি ভালো আধুনিক বড় জাত নির্বাচন করেন তাহলে ভালো ফলন অবশ্যই পাবেন। এছাড়াও আপনাকে ভালো ফলনের জন্য সুষম সারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বোরো শীতের মৌসুমে বা বৈশাখ মাসে চাষ করা হয়। অল্প খরচে কৃষকরা অনেক বেশি লাভ করতে পারে এই বোরো ধানে।
লেখকের শেষ কথা
ধান হচ্ছে বাংলাদেশের প্রধান ফসল ধান আমাদের শস্য খাদ্য। তিন ধরনের ধান চাষ বেশি হয় আউশ বড় ও আমন ধান। ধানের সাথে জড়িয়ে রয়েছে আমাদের দেশের অর্থনীতি। ধানের ফসল যত ভালো হবে আমাদের অর্থনীতি তত বেশি বেড়ে যাবে। ধান সম্পর্কে আপনাদের অজানা তথ্যগুলো আশা করি এত সময় জানা হয়ে গেছে। ধান চাষের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি কোনটি ও বাংলাদেশের ধান চাষের মৌসুম কোনটি বিভিন্ন ধরনের তথ্য জেনে গেছেন। আমার লেখা আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লাগে তবে প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য পেতে আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন আপনাদের যদি কোন মন্তব্য থাকে তাহলে কমেন্ট করে তা জানাতে পারেন।
Setu24 নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url