ড্রাগন ফল আসে কত দিনে জেনে নিন
প্রিয় পাঠক আপনি হয়তো বা জানতে এসেছেন ড্রাগন ফল আসে কত দিনে ও ড্রাগন ফল কোন ঋতুতে চাষ করা ভালো সেই সম্পর্কে আসুন তাহলে আমরা সঠিক তথ্যটা জেনে নিই ড্রাগন একটি পুষ্টিকর ফল যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি উপকারী। ড্রাগন ফল আসতে ৩০ থেকে ৩৫ দিন লাগে। ড্রাগন ফল সারা বছরই চাষ করা হয়। ড্রাগন ফল সব ঋতুতেই চাষ করা হয়।
ড্রাগন ফল চাষ করতে হলে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মাসের মধ্যে চাষ করা সবচেয়ে বেশি ভালো এতে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
ভূমিকা
ড্রাগন হচ্ছে একটি পুষ্টিগুণ ফল। এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি উপকারী। আমাদের দেশে অনেকেই এখন ড্রাগন চাষ করে সাধারণত ড্রাগন সব বছরে চাষ করা যায় সব ঋতুতে ড্রাগন খুব ভালো হয়। ড্রাগন ফল চাষ করার ৩০ থেকে ৩৫ দিন পরে ফল আসে। ড্রাগন ফল কিভাবে চাষ করার কিছু নিয়ম আছে তা নিচে জানানো হলো। আপনি যদি পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে অনেক উপকৃত হবেন।
ড্রাগন ফল আসে কত দিনে
ড্রাগন ফল আমরা সবাই কমবেশি খেয়ে থাকি। এটা আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারি ও পুষ্টিকর খাবার। আমাদের দেশের অনেক মানুষ আছে ড্রাগন ফল চাষ করতে চায় কিন্তু কিভাবে ড্রাগন ফল চাষ করবে এটা জানে না। আমরা আজ বলব ড্রাগন ফল কিভাবে আসে কত দিন সময় লাগে। ড্রাগন ফল এর চারা লাগানোর পরে ভালো ভাবে চারা একটু বড় হলে চারার গোড়া বানতে হয়।
তারপরে পানি দিতে হয়। ড্রাগন ফলের চারা লাগানোর ২০ থেকে ২৫ দিনের মাথাই ফুল ফুটে আর ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মাথাই ড্রাগন ফলটা খাওয়ার মতো পাকে। তখন চাষিরা ড্রাগন ফল কাটা শুরু করে। ড্রাগন ফল চাস করার প্রকৃত সময় হচ্ছে জুন মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত করা হয়। ড্রাগন ফল হচ্ছে এক রকমের ক্যাকটাস এটা চাস করার জন্য ফাকা জায়গা ও রোদের তাপ লাগে।
এর যখন ফুল আসে তখন এটার বেশি যত্ন করতে হয়। কারন সেই সময় বাদুর ড্রাগন এর ফুল গুলো নষ্ট করে দেয়। ড্রাগন ফল দেখতে যেমন সুন্দর লাগে লাল হয়ে থাকে পাকার পর তেমনি এটা খেতে অনেক সুন্দর লাগে। আমাদের শরীরের জন্য এটা অনেক ভালো কাজ হয়। কয়েক বছর থেকে ড্রাগন ফল আমাদের দেশের মানুষের কাছে অনেক জনপ্রিয় হয়ে গেছে। আমাদের দেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কিছু উদ্যানতত্ত্ব বিভাগে থেকে গবেষনা করে আমাদের দেশে তিন ধরনের ড্রাগন চাষ করা হয়।
ড্রাগন ফল কোন ঋতুতে চাষ করা ভালো
আমাদের দেশে সারা বছরই ড্রাগন চাষ করা হয়। ড্রাগন ফলের গাছ শক্ত হওয়ার কারণে এটা আমাদের দেশে সবসময় চাষ করা হয়। আমাদের দেশে যেসব চাষিরা আছে তারা মূলত সারা বছর চাষ করে থাকে। জুন মাসের পরে থেকে এক বারে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চাস করা হয়। এই ড্রাগন ফল মূলত আমেরিকার একটা ফল ছিলো। তারপরে আমাদের দেশে কয়েকটি ড্রাগন ফলের জাত নিয়ে আসা হয়।
সেই চারা গুলো আমাদের দেশে লাগানোর পরে ভালো ফলন পাওয়া যায়। আমাদের দেশে এখন অনেক মানুষ আছে যারা ড্রাগন চাষ করছে। এই ড্রাগন ফল সারা বছর চাষ করছে আমাদের দেশের মানুষ। তারপরে থেকে এটা আমাদের দেশের মানুষের কাছে অনেক জনপ্রিয় হয়ে যায়। যারা বাগান তৈরি করবেন ভাবছেন তারা সেপ্টম্বর বা অক্টবরে চারা লাগাতে পারলে ভালো হবে।
তাহলে আপনি এপ্রিল মাসে এটার ফুলটা পাবেন। ফুল আসার ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে আপনি ফল পাবেন। ড্রাগন ফল ১০০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম পর্যন্ত এক একটার ওজন হয়। আমাদের ২ টার ফলন ভালো হয় একটা থাইরেড ও একটা ভেটনাভেট এই দুইটার ফলন আপনি ভালো পাবেন। যারা কম ফলন চান কিন্তু বাজার যাত করবেন মনে করছেন তাদের জন্য থাইরেড চাষ করা ভালো হবে আর যারা বেশি ফলন নিবেন তারা ভেটনাভেট চাষ করতে পারবেন।
ড্রাগন ফলের বীজ কিভাবে চাষ করা যায়
যারা মনে করেন যে বাসাতে চারা করবেন দিয়ে লাগাবেন তাদের জন্য এই লিখা। বীজ থেকে কিভাবে চারা করবো আসুন জেনে নিই। বাজারে আপনি যে কোন সার বিষ এর দোকানে পাবেন কুকোফিট এটা কিনে আনবেন তারপরে সেটাকে ভালো ভাবে হাত দিয়ে ভেঙ্গে গুঁড়ো করে ফেলবেন। সেটাতে পানি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিবেন তারপরে সার দিবেন যাদের বাসাই গরু আছে তারা গরুর গবর দিয়ে দিতে পারবেন।
দোকান থেকে বীজ কিনে এনে রাখতে হবে। তারপরে সেটার মধ্যে কিনে আনা ড্রাগন এর বীজ দিয়ে দিবেন। ড্রাগন এর বীজ দিবার পরে আপনারা তার উপরে আবার কিছু কুকোফিট দিবেন হালকা করে। সব কাজ হয়ে গেলে অল্প কিছু পরিমান দিবেন বীজের মধ্যে। তারপরে সেইটা একটা ছায়া জায়গাতে রাখেতে হবে। তারপরে ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে দেখতে পাবেন চারা বের হয়ে গেছে।
চারা বের হবার পরে কিন্তু চারা তুলবেন না সেই ভাবেই আবার রাখে দিবেন ৫ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত তারপরে দেখবেন চারা গুলো হয়ে যাবে। যখন চারা বড় হয়ে যাবে তখন আপনি সেখানে থেকে চারা তুলে একটু বড় জায়গায় চারা গুলো লাগিয়ে দিবেন। কিন্তু আপনারা মাটি ওটাই রাখবেন তাহলে চারার জন্য ভালো হবে। যখন চারা থেকে বড় হতে থাকবে তখন অব্যশই আপনার গাছের সাথে কোনো কিছু বেধে দিবেন যাতে গাছটা সেজা হয়ে থাকে। চারাতে প্রতিদিন হালকা করে পানি দিতে হবে বেশি দিলে গাছের গোড়ায় পচন ধরে মারা যাবে।
ড্রাগন গাছের ফুল আসার সময়
ড্রাগন গাছ লাগিয়েছেন কিন্তু ফুল আসছে না কিংবা কিভাবে ফুল আসবে তারাতারি এটা ভাবছেন তাহলে এই লিখাটা দেখতে পারেন। ড্রাগন গাছে মূলত এপ্রিল মাস থেকে ফুল আসা শুরু করে। অনেকে আছে যাদের এই সময় ফুল আসে না। আমরা যারা ড্রাগন চাষ করে তারা ড্রাগন গাছে ফুল আসার কয়েক মাস আগে থেকে ড্রাগন গাছে সার দিবেন না।
তাই বলে আপনারা মনে করেন না যে নব গাছে সার দিতে হবে না। শুধু যেগুলোতে ফুল আসার মতো সেই গাছ গুলোতে দিবেন না। যদি দেখেন ড্রাগন শুধু বাড়তে আছে তাহলে ফুল আসবে। যখন ফুল আসার সময় হবে বা এপ্রিল মাসের দিকে আপনার গাছের ডালের মাথা গুলো ২ থেকে ৩ ইন্চি কেটে দিবেন তাহলে দেখবেন খুব তারাতারি ফুল আসবে।
তবে এটা ঠান্ডার সময় কাটিং করা যাবে। সবসময় আমরা চেষ্টা করব ফুল আসার আগে কাটিং করার। সব রকম ডাল কাটিং করা যাবে শুধু সেই ডাল গুলো আমরা কাটিং যেসব ডাল গুলো শক্ত আছে। ডালের কালার যে গুলো গাড়ো সবুজ হবে সেই গুলোই শুধু কাটিং করবো। ফুল আসার আগে গাছে কোন ধরনের সার দিবেন। বিশেষ করে নাইট্রোজেন সার দিবেন না। এটা দিলে গাছের ক্ষতি হবে। এই ভাবে যদি ড্রাগন চাষ করা হয় তাহলে ফলন ভালো পাবেন খুব তারাতারি গাছে ফলন আসবে।
ড্রাগনফল গাছের রোগ
ড্রাগন গাছের রোগ বলতে ড্রাগন গাছে বেশি সময় পচন ধরে। কিন্ত কি কারনে ধরে সবাই তা জানে না। আপনার গাছের গোড়ায় যদি অতিরিক্ত বেশি পানি দেন কিংবা পানি যদি জমে থাকে তাহলে গাছে পচন ধরবে। শুধু এই রোগ তা নয় অনেক গাছে মরিচা ধরে। কিভাবে আমরা মরিচা রোগের সমাধান করি আসুন দেখি। এই রকম সমস্যা শীতের সময় হয় বেশি । প্রতিটা গাছে কম বেশি শীতের সময় মরিচা ধরে।
মরিচা পরলে ভয়ের কিছু নাই কিছু কাজ করলে এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। বেশি শতের সময় এমন হয়ে থাকে ।কারন ঘনো কুয়াশা পড়লে তখন সেটা ডালের গায়ে লেগে থাকার কারণে এমনটা হয়। কিন্তু সময় মতো আমরা যদি এটা ঠিক না করি তাহলে গাছে এই রোগ বাড়তে থাকবে। তাই আমরা চেষ্টা করব যখনি এমন হবে তখনি আমরা এটাই সার বিষ দিয়ে ঠিক করে নিবো।
যখন আমাদের গাছে মরিচা ধরবে তখন আমরা ছোট একটা চাকু কিংবা ধার জাতীয় কিছু দিয়ে সেই মরিচা গুলো কেটে তুলে ফেলতে হবে। মরিচা গুলো তুলার পর আমরা সেখানে থাংগিসাইড নামে একটা পাওডার কিনতে পাওয়া যায়। সেটা নিয়ে এসে ভালো ভাবে গুলিয়ে নিবেন পানি দিয়ে। তারপরে কাটা জায়গা গুলোতে ভালোভাবে লাগাবেন দিয়ে কিছু দিন রেখে দিবেন। তার সাথে থাংগিসাইড গুলে নিয়ে গাছের উপরে ইস্পে করে দিবেন। কিছু দিনের মধ্যে দেখা যাবে সেই সব রোগ ভালো গেছে।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আজকে নিশ্চয়ই আপনারা জেনে গেছেন ড্রাগন ফল কিভাবে চাষ করা হয় বা কোন ঋতুরতে ড্রাগন ফল সবচেয়ে বেশি চাষ করা ভালো বিভিন্ন ধরনের তথ্য আপনারা জেনে গেছেন তাহলে আপনি যদি চান খুব সহজেই ড্রাগন ফলের চাষ আপনি করতে পারেন আপনি চাইলে আপনার জমিতে করতে পারেন অথবা আপনার ছাদেও ড্রাগন ফল চাষ করতে পারেন এ থেকে আপনি অনেক উপকৃত হবেন। ড্রাগন ফল সম্পর্কে আমার লেখা আর্টিকেল যদি আপনাদের ভালো লাগে তবে প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য পেতে আমার ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন।
Setu24 নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url